জুবাইর, চট্টগ্রাম ।
এক মানবিক দৃষ্টান্ত । করোনার মাঝামাঝি সময়। রাত ১০ টার আশেপাশে এক ফোন আসে। ওই পাশ থেকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এক মেয়ে বলে, ‘ স্যার, আমার বাবার অবস্থা খারাপ। হাসপাতালে নিতে হবে। কিন্তু কোন এম্বুল্যান্স আসছে না। কোন গাড়িও নিচ্ছে না। আমার বাবাকে বাঁচান।’ আমাদের থানার গাড়ি তখন আরেক রোগী নিয়ে হাসপাতালে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজনের সাথে কথা বলি। কিন্তু কেউই এম্বুল্যান্স দিতে পারেনি। শেষে আমাদের গাড়ি আসলে সেটা পাঠাই। কিন্তু ততক্ষণে সেই বাবা চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
এই বাবার চলে যাওয়াতে নিজেকে খুবই অপরাধী মনে হচ্ছিল। সে বোন আমার উপর ভরসা রেখেছিলেন, কিন্তু আমি তার প্রতিদান দিতে ব্যর্থ হয়েছি। সেদিনই আমি একটা ভিডিও আপলোড করি এম্বুল্যান্স সঙ্কট নিরসনের জন্য। আমার সে ভিডিও নাড়া দিয়েছে এক মাকে। তিনি তার ছেলেকে বলেন থানায় একটি এম্বুল্যান্স দিতে! এই মা আর কেউ নন; চট্টগ্রামের প্রথম প্লাজমা প্রদানকারী মানবিক মানুষ মিয়া মোঃ তারেক ভাইয়ের শ্রদ্ধেয় মা। আজ সেই এম্বুল্যান্স হস্তান্তরে নিজেই এলেন আমার থানায়। কোতোয়ালীবাসীর জন্য দিয়ে দিলেন একটি এম্বুল্যান্স। করোনাজয়ী এই পরিবারের সৌজন্যে কোতোয়ালী বাসী এখন থেকে বিনামূল্যে পাবেন এম্বুল্যান্স সেবা। আমরা এই সেবার নাম দিয়েছি ‘হ্যালো এম্বুল্যান্স’। খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেবা উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মাহাবুবর রহমান বিপিএম,পিপিএম ।
কোতোয়ালী থানায় যোগদানের পর থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল আমার এলাকার মানুষের ভরসাস্থল হবে আমার থানা। আমার থানা শুধুমাত্র জিডি, মামলা, অস্ত্র উদ্ধার আর আসামী গ্রেফতারের কেন্দ্র হবে না; মানবিকতায়ও মডেল হবে আমার থানা। হ্যালো এম্বুল্যান্স সেই স্বপ্নপূরণে একধাপ হবে বলেই বিশ্বাস করি।