সোমবার-১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-১৭ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

মাতৃভাষার জন্য জাতির পিতার সংগ্রামেই সূচনা হয়েছিল স্বাধীনতার পথ : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ : ‘মাতৃভাষার জন্য পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতির পিতা যে সংগ্রামের সূচনা করেছিলেন, তার মধ্য দিয়েই রচিত হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ।’ – বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে চলার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।

শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চলতি বছরের একুশে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাঙালি। বাংলা আমাদের দেশ। এই বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে, সম্মানের সাথে চলবে। কারো কাছে হাত পেতে নয়, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদা নিয়ে চলব।’ ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ- বাঙালির সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাসের কথা অনুষ্ঠানে মনে করিয়ে দেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকরা যখন আমাদের উপর একটি বিজাতীয় ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল, তখন ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে করাচিতে একটি শিক্ষা সম্মেলন হয়। সেখানেই ঘোষণা হয়েছিল ঊর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। কিন্তু ঊর্দু কোনো মাতৃভাষা না, আর পাকিস্তান নামে যে দেশটি হয়েছিল, তার জনসংখ্যার ৫৬ ভাগের উপরেই আমরা বাঙালি। আমাদের ভাষা বাংলা ভাষা। কিন্তু সেই বাংলা ভাষা বাদ দিয়ে বিজাতীয় ভাষা আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই ঘোষণাটা পূর্ববঙ্গে আসার সাথে সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তখন প্রতিবাদ জানায়। তখনকার যিনি মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীও বলা হত, তার বাড়ির সামনে গিয়েও তারা সেখানে প্রতিবাদ জানিয়ে আসে।

“এরপর ১৯৪৮ সালে চৌঠা জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ নামের সংগঠন গড়ে তোলেন। এবং তারই প্রস্তাবে এই ভাষা আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়।’

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মিছিলে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নির্দেশে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান সালাম, রফিক, বরকত, শফিউরসহ নাম না জানা অনেকে। এরপর বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয় তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায়ই ১৯৭১ সালে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘গৌরবদীপ্ত অবদানের’ স্বীকৃতি হিসেবে ২১ বিশিষ্ট নাগরিক ও তাদের প্রতিনিধিদের চলতি বছরের একুশে পদক তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক পদক তুলে দেন।

পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আমাদের বলতে গেলে রক্ত দিয়ে… শুধু মাতৃভাষায় কথা বলা না, আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ তৈরি করে দিয়েছিল, আমরা তাদের প্রতি সম্মান জানাই। আপনারা আজকে আমাদের ভাষা শহীদ এবং ভাষা সৈনিকদের নামে পুরষ্কার পেয়েছেন। আমি আপনাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই, যারা সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিশেষ অবদান রেখে আজকে এই পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন।’

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype