রবিবার-১৬ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-১৬ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সারাদেশে শুরু হলো করোনার টিকাদান কর্মসূচি

সারাদেশে শুরু হলো করোনার টিকাদান কর্মসূচি

ইতিহাস ৭১ ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলো সারাদেশে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় করোনার টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। সারা দেশের এক হাজার ১৫টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে এই কর্মসূচি।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বা আজ যাঁদের মোবাইল ফোন নম্বরে টিকা নেওয়ার এসএমএস গেছে বা যাবে, তাঁরাই শুধু আজ টিকা নিতে পারছেন। মূলত স্বাস্থ্যকর্মীরাই বেশি টিকা নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি, তালিকাভুক্ত মনোনীত সম্মুখ সারির ব্যক্তি ও ৫৫ বছরের বেশি বয়সের কিছুসংখ্যক ব্যক্তি টিকা পাচ্ছেন।

জানা গেছে, শনিবার পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় চার লাখ মানুষ টিকা দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি মাসে ৩৫ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হবে।

শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম জানান, টিকা দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোথাও যতটুকু ঘাটতি আছে, তাও প্রস্তুত হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা ও উপেজলায় কয়েকজন মন্ত্রী-সংসদ সদস্যসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা টিকা নেবেন এবং টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

চলতিবছরের ২০ জানুয়ারি দেশে প্রথম ২০ লাখ ডোজ টিকা আসে, যা ভারত সরকার বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে। পরে ২৫ জানুয়ারি সরকারের কেনা টিকা থেকে প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসে। সরকারের হাতে আছে প্রায় ৭০ লাখ টিকা। কোভিশিল্ড নামের এই টিকা অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা যৌথভাবে উদ্ভাবন করেছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এই টিকা উৎপাদন করছে। তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করেছে।

দেশে প্রথম টিকা দেওয়া হয় ২৭ জানুয়ারি, উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী দিনে টিকা নেন ২৬ জন। দেশে প্রথম টিকা নেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। পরদিন রাজধানীর পাঁচটি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ পাঁচ শতাধিক কর্মীকে টািকা দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ সারা দেশে যেসব কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে, এর সবগুলোই সরকারি, আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এসব প্রতিষ্ঠানে মোট বুথ বা দল থাকছে এক হাজার ৪০২টি। অর্থাৎ একেকটি টিকাদানকারী দল একটি বুথ হিসেবে কাজ করছে। প্রতি বুথে থাকছেন দুজন টিকাদানকর্মী ও দুজন স্বেচ্ছাসেবক। টিকাদানকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন নার্স, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক ও উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বা সেকমো। আর স্বেচ্ছসেবকের দায়িত্বে রয়েছেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ আরো কিছু সংগঠনের কর্মীরা। টিকাদানকেন্দ্রের নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

আজ প্রধান বিচারপতি, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রীয় ও সরকারি উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তি ও সংসদ সদস্য টিকা নিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, বাণিজ্যমন্ত্রী জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে টিকা নেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেনের টিকা নেওয়ার কথা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে। মন্ত্রিপরিষদসচিবের টিকা নেওয়ার কথা শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে। এ ছাড়া ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন কেন্দ্রে আরো কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের টিকা নেওয়ার কথা রয়েছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype