আবদুল মান্নান,মানিকছড়ি
মানিকছড়ি উপজেলার অর্ধশত বছরের ঐতিহ্যে ঘেরা মংরাজ বাজার উন্নয়নে বার বার প্রতিন্ধকতা সৃষ্টি করছে অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা। ফলে বছরের পর বছর ব্যবসায়ীদের দূর্ভোগ লেগেই থাকছে। বিশেষ করে সরকারী অর্থায়নে নির্মিত ড্রেনে ও টিউবওয়েল ওপর স্থাপনা এবং গণশৌচাগারের জায়গা বেদখল করে রাখায় সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতারা। ইতোপূর্বে প্রশাসনের কড়াকড়ি না থাকলেও এখন অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে প্রশাসন মাঠে নেমেছে।
ব্যবসায়ী ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রাচীনতম এ বাজারটি মংরাজ বাহাদূর এর আবাসস্থল ও রাজপ্রাসাদের প্রধান গেইটে সংলগ্ন হওয়ার কারণে বাজারটির নামকরণ করা হয়‘রাজ বাজার’ হিসেবে। ফলে সেই স্বাধীনতা পূর্ব থেকে এখন পর্যন্ত এ বাজারে ছোট-বড় ৫শতাধিক ব্যবসায়ী রয়েছে। আর উপজেলার প্রসিদ্ধ ও প্রাচীনতম হওয়ার কারণে এ বাজারে সাপ্তাহিক হাটবার শনিবারে অন্তত কয়েক হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে। এছাড়া প্রতিদিন বিকালে এ বাজারে শত শত ক্রেতারা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে বাজারে জমায়েত হয়। আর সরকারের প্রতি বছর এ বাজার থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেন। যদিও ব্যবসায়ীসহ সর্ব মহলের অভিযোগ এ বাজার থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব নিচ্ছে তার চার আনাও উন্নয়নে ব্যয় করছে না! তারপরও ইউনিয়ন পরিষদ, বাজার ফান্ড ও উপজেলা পরিষদ ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার্থে ড্রেন,গণশৌচাগার, রাস্তা,টিউওয়েল নির্মাণে মাঝে-মধ্যে অর্থবরাদ্দ করছে। কিন্তু কতিপয় ব্যবসায়ী নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে যুগাধিকাল পূর্বে নির্মিত ড্রেন,ও টিউবওয়েলগুলো ধ্বংস তার ওপর স্থাপনা বানিয়ে জবর-দখল করে রেখেছে! ফলে সময়ের প্রয়োজনে বাজার সম্প্রসারণ কিংবা ড্রেন,টিউবওয়েল, গণশৌচাগার নির্মাণে জায়গার সংকটে বিপাকে পড়েছে উন্নয়ন সংস্থাগুলো। যার ফলে সম্প্রতিকালে বাজারের রাস্তা-ঘাট,ওলি-গলিতে ময়লা-আর্বজনার দূষিত পানি থৈ থৈ করছে। যে কেউ স্বচোখে দেখলে বলবে এটা যেন বীজতলা কিংবা পোনা মাছ চাষের জলাশয়। বাজার ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতার দূর্দশার বাস্তব চিত্র দেখতে ২৭ সেপ্টেম্বর বিকালে সরজমিনে আসেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন, উপজেল সির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম বাবুল। এ সময় বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রুপেন পাল ও সাধারণ সম্পাদক মো. নুর ইসলাম এবং ব্যবসায়ী তুষার পালসহ অনেকে প্রশাসনকে ড্রেনের জায়গা বেদখলের চিত্র দেখিয়ে দিলে তাৎক্ষণিক প্রশাসন অবৈধ জায়গা(ড্রেনের ওপর) নির্মিত দোকান ভাঙ্গার নির্দেশ দেন এবং লোকজন দিয়ে ভাঙ্গা শুরু করেন। প্রশাসনের তড়িৎ পদক্ষেপ দেখে স্বঃস্তি প্রকাশ করেন বাজারে আসা ক্রেতারা। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, অবৈধভাবে কেউ প্রভাব ঘাটিয়ে সরকারী জায়গা বা স্থাপনা দখলে রেখে উন্নয়ন ব্যাহত করার স্বপ্ন দেখলে ভূল করবেন। এখনো যারা ওলি-গলিতে জনকল্যাণে নির্মিত সরকারী সম্পদ দখলে রেখেছেন তারা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিয়ে উন্নয়নে সহযোগিতা করেন। আমরা ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতা বান্ধব বাজার উপহার দিতে বদ্ধপরিকর।
আবদুল মান্নান