রবিবার-১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৩ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

নারীর প্রতি সহিংসতাঃ প্রতিরোধ ও প্রতিকার

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে দেশের আপামর জনসাধারণকে সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। বাল্যবিবাহ বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে অভিভাবক, শিক্ষকসমাজ ও এলাকার রাজনৈতিক নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। নারী নির্যাতনের সংস্কৃতিকে সমর্থন করে, এমন পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ নিরোধের লক্ষ্যে জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে। যৌতুক, পারিবারিক সহিংসতা ও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধ।
নারীর বিষয়ে সমাজের পুরুষের বিশেষ করে তরুণ সমাজের যে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতা, তা থেকে আধুনিক যুক্তিযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের জন্য সচেতনতার প্রয়োজন। সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজকে সব ক্ষেত্রে সম–অংশগ্রহণের সুযোগ করে না দিলে এবং নারী ও কন্যাশিশুদের বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতা বন্ধ না হলে সমাজ ও রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারবে না। নারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, এসিড সন্ত্রাস, যৌতুকের দাবি ও পারিবারিক সহিংসতা—এসব প্রতিরোধে যেসব আইন হয়েছে, সেগুলোর বাস্তব প্রয়োগ করতে হবে।
বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশও আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস পালন করছে।
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষের ঘোষণায় বলা হয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সহিংসতার অস্ত্র হিসেবে ধর্ষণের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। ধর্ষণ, গণধর্ষণ, হত্যা, এসিড নিক্ষেপ, উত্ত্যক্ত, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন, বে-আইনি ফতোয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কিশোরী নির্যাতন বন্ধে নীরবতা ভেঙে এগিয়ে আসতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নিমূ‌র্লের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সচেতনতা মূলক কর্মসূচিতে নারী ও কন্যাশিশুদের যুক্ত করতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নিমূ‌র্ল কর্মসূচিতে পুরুষসমাজকে যুক্ত করে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার এবং ওসিসির কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে হবে। প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার চালুর লক্ষ্যে বাজেটে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ রাখতে হবে। পরিবার থেকে নারী নির্যাতনবিরোধী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। গৃহপরিচারিকা নির্যাতন বন্ধে আইন প্রণয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিন্ন পারিবারিক আইন চালু করতে হবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধমূলক কর্মসূচি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।

লেখকঃ সাংবাদিক,
সমাজকর্মী ও সংগঠক

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype