প্রশ্ন তুলছেন চট্টগ্রামের আইনজীবীরা সব খোলা থাকলে আদালত কেন নয়
কিছু মামুলি ধরনের কিছু মামলার জামিনের জন্য ভার্চুয়াল শুনানি হলেও করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টানা ৩ মাস আদালতের কার্যক্রম কার্যত বন্ধ রয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও নতুন মামলা ফাইলিং, জেরা-জবানবন্দি, ফাইনাল হিয়ারিং এসব কাজ বন্ধই বলা যায়। এছাড়াও কর্পোরেট মামলাসহ দেওয়ানি মামলাগুলোর কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। সরকারি দপ্তর, ব্যাংক, শপিংমলও যদি সীমিত আকারে খোলা যায় আদালতের কার্যক্রম কেন নয়— এমন প্রশ্ন তুলেছেন চট্টগ্রামের আইনজীবীরা।
শুধু প্রশ্নই নয়, আগামী ১ জুলাই থেকে স্বাভাবিক নিয়মে কোর্ট চালু না করলে আদালত বর্জনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রামের দুই শতাধিক আইনজীবী। সিদ্ধান্ত জানিয়ে তারা ইতিমধ্যে আইনজীবী সমিতিকে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৩ জুন) স্বাভাবিক নিয়মে আদালত চালুর দাবি জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির ৩ নম্বর মিলনায়তনে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দুই শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত থেকে এ দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছেন। তারা আইনজীবীদের মধ্যে একটি অনলাইন ভোটাভুটির আয়োজনও করে। সেখানে ৯৬৭ জন অংশগ্রহণকারী আইনজীবীর মধ্যে ৯৪৩ জন ভোট দিয়েছেন স্বাভাবিক নিয়মে আদালত চালুর পক্ষে। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এএইচএম বদরুল আনোয়ার চৌধুরী, মো. ফেরদৌস আহমদ, মো. রেজাউল করিম, সাবেক সেক্রেটারি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট টি আর খান।
ভার্চুয়াল কোর্টের কারণে টাউটদের উৎপাত বেড়ে গেছে উল্লেখ করে আইনজীবী রাশেদুল আলম বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কোর্ট চলছে ভার্চুয়ালি। যদিও পুরনো মামলাসহ অনেক কিছুই আগের মতোই আদালত ভবনে স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে। ইতিমধ্যে ভার্চুয়াল কোর্টের কারণে টাউটদের উৎপাত বেড়ে গেছে। তারা বিচারপ্রার্থী মানুষের সাথে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এখন সীমিত আকারের হলেও স্বাভাবিক নিয়মে কোর্ট চালুর করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। নিয়মিত ফৌজদারি মামলা দায়ের, আসামিদের আত্মসমর্পণ, জামিন শুননি, রিমান্ড শুনানি, সিভিল মামলা দায়ের, নিষেধাজ্ঞা শুনানির সুযোগ দেওয়া না হলে শুধু আইনজীবীরাই নন, বিচারপ্রার্থীরাও চরম দুর্ভোগে পড়বেন।
ভার্চুয়াল আদালতে তেমন কোনো লাভ হচ্ছে জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আইনজীবী বলেন,দেখুন আদালত হচ্ছে না বলে যে মামলা হচ্ছে না— তা কিন্তু নয়। বরং মামলা ফাইলিং না হওয়ার কারণে আদালতে টাউটরা সক্রিয় হয়েছে। সাধারণ ঘটনা থেকেও ভায়োলেন্স হচ্ছে। এছাড়া ভার্চুয়াল করেই বা লাভ কী? পরিচালনা করলেও করোনা তো থামেনি। আদালতে না এসেও আক্রান্ত হয়েছেন চল্লিশের বেশি আইনজীবী। শুধু কোর্ট করলেই করোনা হবে তাই না