রবিবার-১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৩ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

প্রবেশের ঝুঁকিতে রয়েছে ভারতীয় বেনাপোলবাসী

অনলাইন ডেস্ক
করোনার ভারতীয় ধরন প্রবেশের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বেনাপোলবাসী আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসা ট্রাক চালকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা না থাকায় । প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৪০০ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসব ট্রাকের চালক এবং সহযোগীদের বাড়ি গুজরাট, দিল্লি, ঝাড়খন্ড, বিহার, ইউপি, মধ্য প্রদেশ ও পশ্চিমবাংলাসহ বিভিন্ন এলাকায়।

পণ্যবোঝাই ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের সময় সীমান্তে ট্রাকের চাকায় নামমাত্র জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। পণ্য গাড়ি, মানুষ জীবাণুনাশকের আওতাভুক্ত থাকায় করোনা সংক্রমণ রোধ নিয়ে যথেষ্ঠ সংশয় রয়েছে। বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বন্দরের পক্ষ থেকে ট্রাকচালক ও সহকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যকর্মীদের বাদ রেখে অনভিজ্ঞ আনসার সদস্য দিয়ে চলছে এসব ট্রাক চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে ডিজিটাল মেশিনে শুধুমাত্র তাপমাত্রা মাপার কাজ।

বন্দরে পণ্য লোড-আনলোডের সাথে সরাসরি জড়িত কাস্টমস, বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিএন্ডএফ কর্মচারী, বন্দর শ্রমিক, ট্রান্সপোর্ট শ্রমিক, দুই দেশের ট্রাক চালক ও হেলপার, নিরাপত্তার সাথে জড়িত আনসার সদস্যসহ হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। বন্দরের ভেতরে কোনো সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই। বন্দর বা প্রশাসনের নেই তদারকির কোনো ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা বলছেন, ভারত থেকে যেসব ট্রাক চালকরা বন্দরে আসছেন, তারা আদৌ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না। শ্রমিকরা যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বেনাপোল বাজারসহ আশপাশের দোকানে তাদের হরহামেশা দেখা যাচ্ছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি না থাকায় মাস্ক ও পিপি ছাড়া যত্রতত্র চলাফেরা করছে চালক ও খালাসিরা। দুই দেশের শ্রমিকদের মধ্যে অবাধে চলছে হাতে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় এবং বিড়ি বদল। কখনো একটি সিগারেট দুজনে হাত বদল করে দিচ্ছে সুখটান। চালক-হেলপারদের মুখে মাস্ক থাকলেও তা ঝুলছে থুতনিতে। বাংলাদেশি শ্রমিকদের মুখে তো মাস্ক নেই।

এ ব্যাপারে বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, যেসব শ্রমিকের মুখে মাস্ক নেই, তাদের মাস্ক দেওয়া হচ্ছে। হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। বন্দর থেকে যাতে বের হতে না পারে সে জন্য নিরাপত্তারক্ষীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ভারতে করোনার নতুন সংক্রমণে মৃত্যুহার বেড়ে গেছে। এজন্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে সরকার বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু দেশের শিল্প-কলকারখানাগুলোতে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখতে বেনাপোল বন্দর লকডাউনের আওতামুক্ত রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চালু রাখে। এতে স্বাভাবিকভাবে রেল ও স্থলপথে বেনাপোল-পেট্রাপোল দুই দেশের মধ্যে চলছে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম।

বন্দরে বাণিজ্য সম্পাদনায় কাজ করছেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকসহ প্রায় ২০ হাজার কর্মজীবী মানুষ। তবে বন্দরটিতে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়ে চলেছে। ভারতীয় ট্রাক শ্রমিকদের প্রতিটি মুহূর্তে সংস্পর্শে আসছে বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ৫টি সংগঠনের হাজার হাজার মানুষ।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, যেহেতু ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে ট্রাক চালকরা বেনাপোল বন্দরে আসছেন। আমরা বন্দর এবং কাস্টমসকে বলেছি যাতে ভারতীয় চালক ও হেলপাররা বন্দরের বাইরে বের না হন। এদের সামাজিকভাবে বাধা না দিলে বেনাপোলে করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype