সোমবার-১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৪ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

পাঠ্যবইয়ের সাথে সাথে অন্য যত রকমের বই পড়া যায় শিক্ষার্থীদের: শিক্ষামন্ত্রী

পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান ও ইতিহাসহ অন্য সকল বই পড়ার সুযোগ করে দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এদেরকে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

শনিবার মেহেরপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত মুজিব শতবর্ষে মেহেরপুর জেলার শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘শততথ্যে জাতির পিতা’ শীর্ষক প্রকাশনা বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান তিনি।

দুপুরে ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের সোনার মানুষ হতে হবে। শিক্ষার্থীদের সোনার মানুষ হওয়ার জন্য আমি একটি বিষয়ে জোর দিতে চাই সেটা হলো বই পড়তে হবে। বই পড়া মানে শুধু ক্লাসের বই পড়া নয়। আমাদের সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীকে আহ্বান জানতে চাই ক্লাসের বই ছাড়াও যত রকমের বই পড়া যায় পড়তে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অন্য বই (পাঠ্যবই ছাড়া) পড়তে গেলে অনেক সময় বাবা-মা বলেন, পড়া (ক্লাসের পড়া) নষ্ট হচ্ছে। আমি বিনীতভাবে অনুরোধ করছি এটি করবেন না। আপনার সন্তান ক্লাসের বই ছাড়াও যত বই পড়তে পারে পড়তে দিন। সাহিত্য বা জ্ঞান বিজ্ঞান হোক, ভ্রমণ কাহিনী, জীবনী, আইসিটির বই পড়তে দিন। পৃথিবীতে যত মানুষ সফল হয়েছে তাদের সবার ডিগ্রি আছে তা কিন্তু নয়। কিন্তু তারা অনেক বই পড়েছেন। পাঠ্যবইয়ের বাইরেও অনেক বই পড়েছেন। তাই প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হলে আমাদের অনেক বই পড়তে হবে, শুধু পাঠ বই নয়, নানা বিষয়ের বই।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্যদিয়ে একুশ বছর পর যখন শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতা পান, তখন থেকে একাত্তরে জন্ম হওয়া বাংলাদেশের মূল্যবোধ ধারণ করে এগিয়ে যাওয়া শুরু করি আমরা। তখন থেকেই আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে সঠিক জায়গায় নেওয়ার চেষ্টা করি। বর্তমানে আমরা—কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার ওপর জোর দিচ্ছি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন রাজনৈতিক শিক্ষার কথা বলেছিলেন, সেখানে অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক মুক্তি, ক্ষুধা-দারিদ্র্য থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে মুক্তির কথা বলেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে আমরা সেই বাংলাদেশ করার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ। বঙ্গবন্ধুকন্যা ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সে বাংলাদেশ আমরা অর্জন করেছি। তিনি আমাদের ২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিছেন। ২০৩০ সালেও আমাদের একটি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেটি হচ্ছে—টেকসই উন্নয়ন। তিনি আমাদের ২১০০ সালের ব-দ্বীপ পরিকল্পনাও দিয়েছেন। আমরা তার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করবো।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মো মনসুর আলম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন, জাতির পিতা শেখ মুবিজুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মর্তুজা, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ইসমাইল হোসেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দু’টি স্বপ্ন ছিল- একটি হচ্ছে এই জাতিকে মুক্তির স্বাদ দেয়া, আর অন্যটি হচ্ছে এ দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা। এদেশকে দ্রুত সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদেরকে জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে কাজ করে যেতে হবে। এজন্য তরুণ প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দিতে হবে।একইসঙ্গে চাই—আমাদের শিক্ষার্থীরা দক্ষতা যোগ্যতা যেমন অর্জন করবে, তেমনি মানবিক মূল্যবোধ, সততা, আন্তরিকতা, পরমতসহিষ্ণুতা এসব মূল্যবোধ ধারণ করে বড় হবে। সেভাবেই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাবার চেষ্টা করছি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype