আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি : গত ২২ জানুয়ারী মানিকছড়ি উপজেলার অজপাড়া গাঁ লিপিপাড়ায় অগ্নিকান্ডে নিহত হয় দুই অবুঝ ঘুমন্ত শিশু মংচালা মারমা (১২) ও উম্রা মারমা(৬)! আগুনে পড়ে ছাই হয় অভিভাবকের বসত ঘর। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার পর জেলা প্রশাসকের নির্ধেশে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ায় উপজেলা প্রশাসন । ফলে তাৎক্ষনিক নগদ টাকা ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন উপজেলা প্রশাসন। এবার জেলা প্রশাসক সেই সর্বস্বান্ত পরিবারের প্রতি মহানুববতায় এগিয়ে এসে‘সুখের নীড়’ বানিয়ে দিলেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস।i
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ২নং বাটনাতলী ইউনিয়নের পশ্চাৎপদ জনপদ লিপি পাড়া গ্রামে বিগত জানুয়ারী মাসের ২২ তারিখ রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ ঘটিকায় চুলার আগুনের সূত্রপাতে মেমং মারমা’র ঘুমন্ত শিশু মংচালা মারমা (১২) ও উম্রা মারমা(৬)সহ পুরো ঘরটি পুড়ে ছাই হয়! পিতা-মাতা,নানা-নানীর ও আত্মীয়-স্বজনের সামনে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনান ঘটলেও আগুনের লেলিহানে কেউই এগিয়ে এসে ঘুমন্ত শিশু দুইটিকে বাঁচাতে পারেনি! অনায়াসে শিশু দুইটিসহ পুরো ঘরটি অগ্নিগর্ভে ছাই হয়ে যায়।
এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার খবর পেয়ে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসব প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ওই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। ফলে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া আফরোজ,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ কামাল উদ্দীন, চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম মোহন, অফিসার ইনচার্জ আমির হোসেনসহ জনপ্রতিনিধি’রা সরজমিনে ছুঁটে যান। তখন তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা, ৬০ কেজি চাউল, ১০ পিচ কম্বলসহ খাদ্য সামগ্রী তুলে উপজেলা প্রশাসন।
ঘটনার নির্মমতা ও দরিদ্র পরিবারের প্রতি জেলা প্রশাসকের সু-দৃষ্টি থাকায় জেলা প্রশাসক জি.আর ফান্ড থেকে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দিত দু’ কক্ষ ও ১ কিচেন এবং বারান্দা বিশিষ্ট একটি ঘর(সুখের নীড়) নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে সম্প্রতি ঘর নির্মাণ শেষ করেন উপজেলা প্রশাসন। ৫ ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে সেই ‘সুখের নীড়’ উদ্বোধন করতে সরজমিনে আসেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ও সন্তান হারা পরিবারটিকে স্বান্তনা দেন এবং ঘরের চাবি হস্তান্তর করে তা উদ্বোধন করেন। এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আসমা, অফিসার ইনচার্জ আমির হোসেন, চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম মোহন, ক্যয়জরী মহাজন, মোঃ শফিকুর রহমান ফারুক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ কামাল উদ্দীন, ইউপি সদস্য সুইথোয়াইপ্রু মারমা উপস্থিত ছিলেন। নতুন ঘর পেয়ে শিশু সন্তান ও ঘর হারা মেমং মারমা স্বস্তি প্রকাশ করে জেলা প্রশাসকের জন্য আর্শিবাদ কামনা করেন।