মোহাম্মদ জুবাইর চট্টগ্রাম।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে এবারও জশনে জুলুস (র্যালি) আয়োজন করা হয়েছে চট্টগ্রামে। শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় এ আয়োজন করা হয়। সকাল ৮টায় আলমগীর খানকা থেকে র্যালি শুরু হয়। র্যালি শেষে আলোচনা সভা এবং জুমার নামাজের পর মিলাদ, কিয়াম ও মুসলিম উম্মাহার শান্তি কামনা করে মুনাজাতের মাধ্যমে এ আয়োজনের সমাপ্তি হয়।
জানা গেছে, ১২ রবিউল আওয়াল বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর জন্মদিন উপলক্ষে ১৯৭৪ সাল থেকে চট্টগ্রামে জশনে জুলুস আয়োজন করা হচ্ছে। হাজার হাজার মুসলিম ধর্মাবলম্বী এ জুলুসে অংশ গ্রহন করে থাকে। প্রতিবছর বড় পরিসরে এই জুলুস আয়োজন করা হলেও এবার করোনার কারণে আয়োজন করা হয়েছে কমিয়ে আনা হয়েছে। মুখে মাস্ক পরার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে র্যালিতে অংশ নিতে বলা হয়েছে জুলুসে অংশ নিতে আসা ব্যক্তিদের।
আনজুমান রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের জেনারেল সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন ইতিহাস ৭১ কে বলেন, ‘করোনর কারণে এবার জুলুস আলমগীর খানকা থেকে শুরু হয়ে মুরাদপুর, ওয়াসা জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ চত্বর থেকে একই পথে আবারো সুন্নিয়া মাদ্রাসা ময়দানে ফিরে আসবে। পরে সেখানে আলোচনা সভা, জুমার নামাজ, মিলাদ, কিয়াম ও মুনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্তি হবে। সকাল ৮টা থেকে ১১টার মধ্যেই র্যালি শেষ করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গাউসিয়া কমিটির কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন, ‘এবারের জুলুস স্বাস্থ্যবিধি মেনে তুলনামূলক কম পরিসরে উদযাপিত হয়।
জুলুসে আগত সবাইকে মাস্ক পরতে হয়। আমরা আগতদের জন্য মাস্ক ও হ্যান্ডস্যানিটইজারের ব্যবস্থা করেছি। এবারে র্যালির পরিসরও কাটছাট করা হয়।
জানা গেছে, জুলুসে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্কের ব্যবস্থা করা হয়। জুলুসের আয়োজকদের পক্ষ থেকে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে। এবারের জুলুসে পাকিস্তান দরবারে ছিরকোট শরীফ থেকে সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের (মা.জি.আ) শাহ আসবেনা। এবারের জুলুসে চট্টগ্রামের বাইরের জেলা থেকে কাউকে অংশ নিতে নিষেধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রামে বলুয়ারদিঘী খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্ব প্রথম জুলুসটি বের করে আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া। ওই জুলুসে নেতৃত্ব দেন আঞ্জুমান ট্রাস্টের সিনিয়র সহ-সভাপতি নুর মোহাম্মদ আল কাদেরি। এরপর ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত এ জুলুসে নেতৃত্ব দেন সৈয়দ মোহাম্মদ তৈয়ব শাহ (রা.)।
মূলত ১৯৭৬ সালের পর থেকেই ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ১২ রবিউল আওয়াল চট্টগ্রামে এ জুলুসের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকে। যা ক্রমান্বয়ে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, দরবার, সংগঠন ও সংস্থাগুলোও আয়োজন করতে শুরু করে।