
আল মামুন ঘিওর মানিকগঞ্জ:
প্রতি বছর বৈশাখের শেষের দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার গণসিংজুরি গ্রামের বটতলায় এ মেলা বসে। ঠিক কবে থেকে বটগাছ তলায় এই বৈশাখী মেলা বসে তা কারও জানা নেই। তবে প্রাচীনকাল থেকেই এ মেলার প্রচলন বলে ধারণা স্থানীয়দের।
মেলায় প্রায় চার দশক ধরে ঝাল চানাচুর বিক্রি করেন মিনাজ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমার জন্মের পর থেকেই এই মেলা দেখে আসতেছি। আমার বাপ দাদারাও দেখে আসছেন। তারাও বলতে পারেননি এই মেলা কবে থেকে শুরু হয়েছে।’
মাটির হাড়ি পাতিল, পুতুল, খেলনা, থেকে শুরু করে মুড়ী, মুড়কি, বিন্নি ধানের খৈ, মিষ্টি বাতাসা, গৃহস্থালির জিনিসপত্র, সাজ সরঞ্জাম এমনকি বাদ্যযন্ত্রের পসরাও বসে এই মেলায়। মেলায় কেনাকাটা করতে আসা মানুষের ভিড় ছিল উপচে পড়ার মতো। বেচাকেনাও ছিল জমজমাট।
ঘিওর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের লোকজন সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন এই মেলার জন্য। তাদের প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্রের তালিকাও তৈরি হয় এই মেলাকে ঘিরে।
মেলায় ঘুরতে আসা আমিন মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘মেলা থেকে গৃহস্থালির অনেক জিনিসপত্র কিনতে হয়। তাই মেলার জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকি।’মেলা থেকে কুলা, পিঁড়ি, পাখা, ও মাটির পাতিল কিনেছেন তিনি।
বাবার সাথে মেলায় ঘুরতে এসেছে সুমন নামের এক শিশু। মেলা থেকে একটি খেলনা গাড়ি কিনে অনেক খুশি সে। কথা হলে সুমন বলে, ‘মেলা থেকে ভেকু (মাটি কাটার খেলনা যন্ত্র) কিনেছি। বাড়ি গিয়ে মাটি কাটব।’
বাঁশি কেনার পর ঢোলের জন্য বায়না করেছে মাসুদ নামের আরেক শিশু। কথা হলে মাসুদের বাবা আব্দুল গনি মিয়া বলেন, ‘প্রতি বছর এই মেলা থেকে খেলনা কিনে দেব বলে ছেলেকে আশায় রাখি। তাই যা চায় তাই কিনে দেই।’
এতে ছেলে অনেক খুশি হয় বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে সিংজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুর রহমান মিঠু বলেন , কবে থেকে এই মেলা শুরু হয়েছে তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারবে না তবে আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি এই মেলা। এই মেলায় ঘিওর উপজেলা ও দৌলতপুর উপজেলাসহ আরো বিভিন্ন এলাকার লোকজন আসে বেচা বিক্রি করতে। মেলাকে ঘিরে প্রতিটা বাড়িতেই আসে আত্মীয়-স্বজন, জামাইসহ আরো অনেকে। আমি আমার সিংজুরী ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মেলায় আগত সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা।