শুক্রবার-১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৩রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-১৭ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি

মানিকছড়িতে অসহায়-দুঃস্থ ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি পরিবারে মিলেছে মাথা গুজার ঠাঁই,

আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপি দুঃস্থ পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ ‘দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ’ ও আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় পার্বত্য এলাকায় বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণের ফলে সুখের নীড়ে বসবাস শুরু করেছে মানিকছড়ি’র ৯৪ দুঃস্থ ,অসহায় ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি পরিবার। সবুজ পাহাড়-পর্বতে ঘেরা অভাব-অনটনের সংসারে সুখের নীড়ে মাথা গুজার ঠাঁই পেয়ে পরম স্বস্তি ও আনন্দের বন্যায় ভাসছে পরিবারগুলো।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দরিদ্র ও দুঃস্থ পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে ২০১৮-২০২০ দুই অর্থবছরে দেশব্যাপি দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি দরিদ্র ও দুঃস্থ পরিবারে বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করেন। এতে মানিকছড়ি উপজেলার ৮২টি হত-দরিদ্র, অসহায়, দুঃস্থ পরিবারে দু’কক্ষ বিশিষ্ট ঘর, পাশে একটি কিচেন রুম ও একটি টয়লেট, একটি করিডোর,একটি বারান্দা বিশিষ্ট টিন সেট ঘর নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি ঘরে সরকারের ব্যয় হয়েছে দু’ লক্ষ ৯৯ হাজার ৫শত টাকা।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় পার্বত্য এলাকায় বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ প্রকল্পে উপজেলার চার ইউনিয়নে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ১২টি পরিবার পেয়েছে বিশেষ ডিজাইনের ঘর। তিন বেড রুম, এক কিচেন, এক বারান্দা (১৯ ফুট লম্বা ),এক গোসলখানা ও এক টয়লেট বিশিষ্ট আরসিসি পিলারে টিন সেট প্রতিটি ঘরে সরকারের ব্যয় ৫ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা। উক্ত দুই প্রকল্পে উপজেলার ৯৪টি অসহায়,দুঃস্থ ও দরিদ্র পরিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র এই বিশেষ প্রকল্পের ইট,সিমেন্ট ও রড গড়া নতুন সুখের নীড় পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ প্রকল্পে উপকারভোগী হ্লাঅংসু মারমা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, আমি জীবনে ইট ও রড,সিমেন্ট বানানো ঘরে ঘুমাতে পারবো, এটা আশা করিনি! ভগবান শেখ হাসিনাকে কৃপা করায় তিনি আমাকে এত সুন্দর ঘর বানিয়ে দিয়েছে। আমি খুশি, প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। প্রবারণা শেষে আমি নতুন ঘরে উঠবো।

এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ প্রকল্প আসায় আমি আমার এলাকায় দরিদ্র, অসহায় ও দুঃস্থ লোকজনের মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি থেকে তিন পরিবার যাচাই-বাচাই করে ঘর তৈরিতে সহযোগিতা করেছি ।

একইভাবে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহে উপকারভোগী নুনু চৌধুরী,মরমচান বিবি বলেন,আমার মরহুম স্বামী একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, ওনার মৃত্যুর পর দুই সংসারের ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমি দুঃখ-কষ্টে দিনাতিপাত করতাম। প্রধানমন্ত্রীর এই মহৎ অনুকম্পায় আমি নতুন সুখ ফিরে পেয়েছি। স্বামী হারা আফিয়া বেগম জানান, ইট,সিমেন্টের ঘরে বসবাস ভাগ্যে জুটবে তা কখনও কল্পনাও করিনি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অবদানে এখন বৃদ্ধঃবয়সে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখের নীড়ে বসবাস করতে পেরে প্রধানমন্ত্রী’র জন্য শুভ-কামনা ও দোয়া করছি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন জানান, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আমরা ইতোমধ্যে ‘দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পে ৮২ পরিবার এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় পার্বত্য এলাকায় বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ প্রকল্পে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ১২ পরিবারকে সুবিধা দিতে পেরেছি। এসব দরিদ্র. অসহায় ও দুঃস্থ পরিবারগুলো এখন সুখের নীড়ের অভিযাত্রী।

উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আমার এ পর্যন্ত ‘দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্প ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায়-উপজেলার তৃণমূলে মোট ৯৪টি দুঃস্থ,অসহায় ও দরিদ্র পরিবারকে সুখের নীড়ে ঠাঁই দিতে পেরেছি। আর এটা সম্ভব হয়েছে দেশরত্ন ও বঙ্গবন্ধু কন্যার শেখ হাসিনার একান্ত মানবপ্রেমের কারণে। এই মহৎ উদ্যোগের জন্য উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে নেত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype