শনিবার-৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-৪ঠা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

২৫ মার্চের ভয়াবহ নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের স্মরণে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ঘোষণার দাবি চট্টগ্রামে

ইতিহাস৭১ডেস্ক:বাঙালি জাতির স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের দাবি চিরতরে মুছে দিতে একাত্তরের সেই রাতে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে ভয়ঙ্কর হতাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি বাহিনী।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী বাবুল সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন।

একাত্তরের সেই কালরাতের শহীদদের স্মরণে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে চট্টগ্রামে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের এক আলোচনা সভায়।

জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার নগরীর দোস্ত বিল্ডিংয়ে সংগঠনের কার্যালয়ে এই আলোচনাসভা হয়।

সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সরফরাজ খান চৌধুরী বাবুল অনুষ্ঠানে বলেন, “একাত্তরের ২৫ মার্চ ভয়াল কাল রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র নিরাপরাধ ও ঘুমন্ত সাধারণ বাঙালির ওপর যেভাবে পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল- তা পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম ভয়াবহ গণহত্যা।

“একটি জনগোষ্ঠীর স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের দাবিকে চিরতরে মুছে দিতে ও বাঙালি প্রজন্মকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার নারকীয় পরিকল্পনা ছিল এই ‘অপারেশন সার্চ লাইট’।”

চট্টগ্রাম জেলা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম মন্টু বলেন, “২৫ মার্চের ভয়াবহ নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে চতুর্দশ অধিবেশনে ২৫ মার্চকে ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন দিবসটিকে ইতিহাসের ভয়ানক গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।”

দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার বলেন, “জাতিসংঘ এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রাচীন ও সাম্প্রতিক গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে। স্বীকৃতি দিয়েছে অটোমান-টার্কদের হাতে ১৯১৫ সালের ১৫ লাখ আর্মেনিয়ানকে গণহত্যা, ১৯৯৪ সালের রুয়ান্ডায় ৮ লাখ তুটসি জাতিগোষ্ঠীর গণহত্যা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের হাতে ৬০ লাখ ইহুদি গণহত্যা, এমন কী স্বীকৃতি দিয়েছে ১৯৯২ সালের বসনিয়া ও ১৯৭৫ সালের কম্বোডিয়ায় গণহত্যারও।

“কিন্তু পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের দোসরদের হাতে যে ৩০ লাখ বাঙালির পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল ১৯৭১ সালে, এর কোনো স্বীকৃতি আজও পর্যন্ত দিতে পারেনি বিশ্ব সংস্থাটি! এই ব্যর্থতা কেবল দুঃখজনক নয়, বরং বিশ্ব সংস্থার চরম ব্যর্থতা ও দৈন্যতারই বহিঃপ্রকাশ।”

বাঙালি গণহত‍্যার এই দিনটি আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে জাতিসংঘে স্বীকৃতি পাওয়া সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ‍্যাপক জাহিদ হোসেন শরীফ, সংগঠনের নগর সাধারণ সম্পাদক সেলিম চৌধুরী, জেলার সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ, ফোরকান উদ্দিন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা গৌরী শংকর চৌধুরী, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মালেক খান, নারী বিষয়ক সম্পাদক সাইফুন নাহার খুশী উপস্থিত ছিলেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype