বৃহস্পতিবার-১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৩০শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-১৪ই শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

চুয়েটে দিনব্যাপী ‘মোবাইল অ্যাপ, গেইম ও জব ফেস্টিভ্যাল-২০২৩’ সম্পন্ন

“দেশের অর্থনীতিতে মোবাইল অ্যাপ ও গেইম ইন্ডাস্ট্রি অবদান রাখবে”- আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি

রাউজান প্রতিনিধি:

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি বলেছেন, “আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না- বঙ্গবন্ধুর এই অমিয় বাণীই বাংলাদেশের আজকের এই উন্নয়নের সাফল্যগাঁথা। ৪র্থ শিল্পবিল্পবের এই সময়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মোবাইল অ্যাপ ও গেইম ইন্ডাস্ট্রি বিশাল অবদান রাখছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আমাদের বর্তমান রপ্তানি আয় প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার। ২০২৫ সালের মধ্যে সেটা ৫ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ব বাজারের উপযোগী করে মোবাইল অ্যাপ ও গেইম ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুলতে হবে। বর্তমানে দেশের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপ ডেভেলপার তৈরির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। চুয়েটের এই ধরনের ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মাঝে উদ্যোক্তা মনোভাব ছড়িয়ে দিতে চাই। দেশের অর্থনীতিতেও মোবাইল অ্যাপ ও গেইম ইন্ডাস্ট্রি অবদান রাখতে বলে আমরা বিশ্বাস করি।” ৪ঠা মার্চ (শনিবার) চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ও গেইম শিল্পে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং এই খাতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর মোবাইল গেইম অ্যান্ড অ্যাপস প্রজেক্টের উদ্যোগে আয়োজিত “মোবাইল অ্যাপ, গেইম এবং জব ফেস্টিভ্যাল-২০২৩” (Mobile App, Game & Job Festival-2023) বিষয়ক দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে সকালে অনুষ্ঠিত উক্ত উৎসবে আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী ও তরুণ নেতৃত্ব জনাব ফারাজ করিম চৌধুরী, আইসিটি বিভাগের উপ-সচিব জনাব মোহাম্মদ মনির হোসেন, চুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মোকাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইসিটি বিভাগের মোবাইল গেইম ও অ্যাপস শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চুয়েটের সিএসই বিভাগের প্রভাষক জনাব মৌমিতা সেন শর্মা ও জনাব সাদমান সাকিব।চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, “মোবাইল অ্যাপস ও গেইম এখন বিশ্বব্যাপী একটি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অন্যতম শিল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিতে ও মোবাইল অ্যাপস ও গেইম হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ খাত। সরকার এ খাতকে গুরুত্ব দিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা মেধা এবং সৃজনশীলতার প্রয়োগ ঘটিয়ে মোবাইল অ্যাপস ও গেইম তৈরিতে এগিয়ে আসলে নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব।”সমাজকর্মী ও তরুণ নেতৃত্ব জনাব ফারাজ করিম চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, “গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির উপর ভর করে আমাদের অর্থনীতি আজকের এই পর্যায়ে এসেছে। কিন্তু যেসব দেশ রোবট বানিয়ে পুরো সিস্টেমকেই বদলে দিচ্ছে, যারা মানুষের ব্রেইনের বিকল্প তৈরিতে সক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে আমরা কতটুকু সক্ষম সেটাও ভাবতে হবে। বিগত এক দশকের আগের মোবাইল অ্যাপ ও গেইমিং ইন্ডাস্ট্রি সম্পূর্ণ বদলে গেছে। প্রযুক্তি শেকড় এখন অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আমাদেরকেও সেই গতিতে আগাতে হবে। সেজন্য দেশের মেধাবীদের যদি দেশে রাখতে পারি তবে দেশের প্রকৃত উন্নতি হবে। আমাদের দেশের মেধা বিদেশিরা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাবে, সেটা কাম্য নয়।”দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় “স্মার্ট ক্যারিয়ার উইথ অ্যাপ অ্যান্ড গেইম”, “দ্য রাইজ অব অ্যানিমেশন: অ্যাক্সপ্লোরিং দ্য ক্যারিয়ার”, “পিপল, ট্রেনিং অ্যান্ড টেকনোলজি”, “অ্যানিমেশন মুভি স্ক্রিনিং” এবং “প্রেজেন্টেশন অন শর্ট লিস্টেড গেইম অ্যান্ড অ্যাপ” শীর্ষক পৃথক পাঁচটি সেশন পরিচালিত হয়। উক্ত সেশনসমূহে বর্তমান বিশ^বাজারের চাহিদা উপযোগী বিভিন্ন ধরনের মোবাইল অ্যাপ ও গেইম তৈরির লক্ষ্যে তরুণ প্রযুক্তিবিদ ও শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মোবাইল অ্যাপস এবং গেইম বিষয়ক দুই শতাধিক আইডিয়া নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে বাছাইকৃত তিনটি আইডিয়াকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া জব ফেস্টিভ্যালে দেশের স্বনামধন্য ২০টি আইটি ও সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। যেখানে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপস, গেইম ও আইডিয়া নিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করেন প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের জন্য ছিল আকর্ষণীয় র‌্যাফেল ড্র। উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ প্রায় এক হাজার লোকের মিলনমেলা বসে।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype