রবিবার-১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৩ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্বকাপে জাপানের জয় ধরাশায়ী জার্মানি

অনলাইন ডেস্ক : ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার পর ধরাশায়ী জার্মানি। পরপর দুই দিন দুই পরাশক্তি এবং সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের গুঁড়িয়ে দেয়া হলো। আর্জেন্টিনাকে মাটিয়ে নামিয়ে ছিল সৌদি আরব। আজ জার্মানিকে হারিয়ে আরও একটা অঘটনের জন্ম দিল এশিয়ারই আরেক দল জাপান। ১-০ গোলে পিছিয়ে যাওয়া ম্যাচটা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জাপান জিতে নিয়েছে ২-১ গোলে।

বিশ্ব ফুটবলের বড় আসরে অন্যতম সফল দল জার্মানি। ব্রাজিলে পর সবচেয়ে বেশিবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব রয়েছে তাদেরই। ‌‌বিশ্বকাপ এলেই যেন অন্য এক দলে পরিণত হয়। প্রতিটা বিশ্বকাপেই ফেভারিটের তকমা নিয়ে হাজির হয়। ২০১৪ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হলেও রাশিয়া বিশ্বকাপে জার্মানির স্মৃতি মধুর নয়।

গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল টমাস মুলারদের। ২০২০ ইউরো কাপেও শেষ ষোলোয় সমাপ্ত হয়েছিল অভিযান। কাতার বিশ্বকাপ অভিযান ভালো হলো না হান্স ফ্লিকের দলের কাছে। জাপানের বোমারু বিমানের আঘাতে বিধ্বস্ত নাৎসীরা। জাপানের কাছে হারতে হল ১-২ ব্যবধানে। আরও একটা অঘটনের সাক্ষী থাকল কাতার।

অঘটন ঘটাল সেই এশিয়ারই দেশ।
ম্যাচের শুরু থেকেই ঝড় তুলেছিল জার্মানি। একের পর এক আক্রমণ করছিল জাপানের বক্সে। কিন্তু জাল ভেদ করতে পারছিল না। অবশেষে ৩১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যায় জার্মানি। ডানদিক থেকে জাপান বক্সে ডেভিড রাউমের উদ্দেশ্যে উঁচু বল বাড়িয়েছিলেন জোসুয়া কিমিচ। রাউম বল ধরতেই প্রথমে তার পায়ে ট্যাকেল করেন জাপান গোলকিপার সুইচি গন্ডা। পরের মুহূর্তেও গায়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। পেনাল্টি থেকে গোল করে জার্মানি এগিয়ে দেন গুন্ডোগান।

পিছিয়ে পড়ার পর রক্ষণাত্মক খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ায় জাপান। জাপানি ফুটবলাররা জানতেন, জার্মানির লম্বা চেহারার ফুটবলারদের সঙ্গে তারা লম্বা পাসে পেরে উঠবে না। তাই জমিতে বল রেখে দ্রুত গতিতে প্রতি আক্রমণ করে আসছিল। কিন্তু জার্মানির রক্ষণে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন অ্যান্টোনিও রুডিগার। সুবিধা করতে পারেনি জাপান। অন্যদিকে একের পর এক আক্রমণ করে জাপান রক্ষণকে সামাল দিচ্ছিলেন ন্যাব্রি, টমাস মুলার, গুন্ডোগানরা। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে দুরন্ত আক্রমণ থেকে জাপানের জালে বল জড়িয়েছিলেন কাই হ্যাভার্টজ। অফসাইডের জন্য সেই গোল বাতিল হয়ে যায়।

৬০ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ এসেছিল জার্মানির সামনে। জামাল মুসিয়ালার কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ শট নিয়েছিলেন গুন্ডোগান। বল পোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটেই প্রতিআক্রমণে উঠে এসে জার্মানির গোল লক্ষ্য করে শট নিয়েছিলেন তাকুমা আসানো। তার সেই শট বারের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। ৭০ মিনিটে তিন তিনবার দারুণ সেভ করেন জাপান গোলকিপার গন্ডা। প্রথমে মুসিয়ালার শট, পরে ন্যাব্রির একটা শট ও হেড। ৭৩ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুযোগ এসে গিয়েছিল জাপানের সামনে। ইতোর শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে বাঁচান ম্যানু্য়েল ন্যুয়ের।

তবে বেশিক্ষণ দূর্গ রক্ষা করতে পারেননি জার্মান গোলকিপার। ৭৪ মিনিটে সমতা ফেরায় জাপান। বাঁদিক থেকে উঠে এসে জার্মানির বক্সে বল বাড়ান মিনামিনো। মিতোমার শট ন্যুয়ের ঝাঁপিয়ে বাঁচালে ফিরতি বল যায় দোয়ান রিৎসুর কাছে। দুরন্ত শটে তিনি সমতা ফেরান।

ম্যাচের চমক ৮৩ মিনিটে। মাঝমাঠ থেকে লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন ইতাকুরা। সেই বল ধরে বক্সে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে জাপানের হয়ে জয়সূচক গোল করেন তাকামো আসানো। মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমিতে জাপানের সূর্যোদয়। আর জয়ের ফলে গ্রুপ পর্বের সব হিসাব নিকাশ পাল্টে গেছে। গ্রুপের অন্য দলগুলোকে নতুন করে হিসাব কষতে হচ্ছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype