শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ফ্রান্সের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো গরমে চাপের মুখে

ইতিহাস৭১ আন্তজার্তিক ডেস্ক:
প্রায় ৭০ শতাংশ আসে ফ্রান্সের জ্বালানি চাহিদার পরমাণু বিদ্যুৎ থেকে। বিশ্বের আর কোনো দেশ পরমাণু বিদ্যুতের উপর এতটা নির্ভরশীল নয়৷। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের টানা গরম পরমাণু চুল্লিগুলোর উপর চাপ তৈরি করছে।

ফ্রান্সে মোট ৫৬টি পরমাণু চুল্লি আছে। এসব চুল্লি ঠাণ্ডা করতে সাধারণত নদীর পানি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তা করতে গিয়ে নদীর পানির তাপমাত্রা যেন নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম না করে, সে বিষয়ে আইন রয়েছে। তবে অন্তত আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই আইন প্রয়োগ স্থগিত করেছে সরকার।
ফলে নদীর পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। যেমন দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গলফ্যাশ এলাকার গ্যারন নদীর পানির তাপমাত্রা প্রায় ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় পরিবেশকর্মী জ্য-পিয়ের ডেলফু।

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ফ্রান্সে গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠছে।সে কারণে গ্যারন নদীর পানি অনেক কমে গেছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি আরও খারাপ করছে গলফ্যাশের পরমাণু চুল্লি। কারণ চুল্লি ঠাণ্ডা করতে আট ঘনমিটার পানি দরকার। কিন্তু শীতলীকরণ প্রক্রিয়া শেষে মাত্র ছয় ঘনমিটার পানি নদীতে ছাড়া হচ্ছে। বাকিটা বাষ্প হয়ে উড়ে যাচ্ছে।

ডেলফু বলেন, পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যচক্রের উপর প্রভাব পড়ছে। ‘‘উষ্ণ পানি মাইক্রোঅ্যালজি ধ্বংস করে দেয়। এই অ্যালজিগুলো ছোট মাছের খাবার। আবার ছোট মাছ হচ্ছে বড় মাছের খাবার। এছাড়া উষ্ণ পানিতে বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে। ফলে এই পানিকে পানযোগ্য করতে বেশি রাসায়নিক ব্যবহার করতে হয়।

এ ব্যাপারে ফ্রান্সের সব পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী সংস্থা ইডিএফ-এর যোগাযোগ করা হলে সংস্থার মুখপাত্র ইমেলে ডয়চে ভেলেকে জানান, এখন পর্যন্ত চালানো তদন্তে পরমাণু চুল্লির কারণে আশেপাশের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

প্যারিস ইউনিভার্সিটি ডোফার ক্লাইমেট ইকোনমি ডাইরেক্টর আনা ক্রেটি জানান, বর্তমান পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সংস্কার ও নতুন পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ফ্রান্স দেড়শ বিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করেছে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য এমন বরাদ্দ না করলেও এই খাতের উন্নয়নে লাল ফিতার দৌরাত্ম কমাতে নতুন আইন করছে ফ্রান্স।

ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্সই একমাত্র দেশ যারা ২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ইইউ ঠিক করেছিল সেটিতে পৌঁছতে পারেনি। ২০২০ সালের মধ্যে একটি দেশের জ্বালানি চাহিদার ২৩ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে মেটানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করছিল ইইউ। ফ্রান্স করেছে মাত্র ১৯ শতাংশ।

সূত্র: ডয়চে ভেলে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype