
আজ ১৩ জুলাই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধমীয় উৎসব আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথি।বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বৈশাখী পূর্ণিমার পরই শ্রেষ্ঠ হলো আষাঢ়ী পূর্ণিমা।বিশ্ববৌদ্ধগণ যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় এই আষাঢ়ী পূর্ণিমা উৎসব পালন করে থাকেন।আমাদের বাংলাদেশেও প্রতিটি বিহারে বিহারে এই উৎসব পালন করে থাকে।
আষাঢ়ী পূর্ণিমার তাৎপর্য হলো ভাবীবুদ্ধ বোধিসত্ত্বের মাতৃগর্ভে প্রতিসন্ধি (জম্ম)গ্রহণ, রাজকুমার সিদ্ধার্থ গৌতম মানবের জন্ম _জরা_ ব্যাধি_ মৃত্যু থেকে চিরমুক্তির অম্বেষায় মহাভিনিষ্ক্রমন (সংসার ত্যাগ),
বারানসী ঋষিপতন মৃগদাব সারনাথে প্রথম ধর্মদেশনা ধর্মচক্র প্রবর্তন,শ্রাবস্তীতে প্রতিহার্য ঋদ্ধি প্রদর্শন,স্নেহময়ী মাতৃদেবী মহামায়াকে নির্বাণ প্রদর্শনার্থে তাবতিংশ দেবলোক গমন এবং ভিক্ষু সংঘের ত্রৈমাসিক বর্ষাব্রত অধিষ্ঠান তিথি।আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত ভিক্ষুদের কতগুলো ধর্মবিনয় রক্ষা করতে হয়।
এই দিবসে বুদ্ধপূজা, পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ, ভিক্ষু সংঘের পিন্ডদান, বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত উপাসনা,ধর্মসভা,আলোচনা সভা,সেমিনার,বৌদ্ধকীর্তন ইত্যাদি বিবিধ কর্মসূচীর মাধ্যমে শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা উদযাপিত হয়ে থাকে।
রাজকুমার সিদ্ধার্থ গৌতম ২৯ বৎসর বয়সে পূর্ণযৌবনে মাতা_ পিতা,স্ত্রী-পুত্র,ধনজনপূর্ণ বিশাল শাক্যরাজ্য,রাজসিংহাসন ত্যাগ করেছিলেন একমাত্র মানবের দুঃখমুক্তির জন্য।মানবের মুক্তির জন্য সিংহাসন ত্যাগ করেছেন এমন নজির আছে কিনা আমার জানা নেই।সুদীর্ঘ কঠোর সাধনার পর বুদ্ধত্বলাভ করে দুঃখমুক্তির পথ আবিস্কার করলেনচার আর্যসত্য, যথা_ ১/ দুঃখ আর্যসত্য,২/দুঃখের কারণ আর্যসত্য,৩/দুঃখ নিরোধ আর্যসত্য এবং ৪/ দুঃখ নিরোধের উপায়আর্যসত্য।এ উপায় হচ্ছে আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ, যথাঃ ১/সম্যক দৃষ্টি, ২/সম্যক সংকল্প, ৩/ সম্যক বাক্য,৪/ সম্যক কর্ম, ৫/ সম্যক জীবিকা, ৬/ সম্যক প্রচেষ্টা, ৭/ সম্যক স্মৃতি ও ৮/ সম্যক সমাধি।
ইহাতে রয়েছে চিরমুক্তি নির্বাণ।আষাঢ়ী পূর্ণিমা হতে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাস পালন করা ভিক্ষুদের বাধ্যতামূলক।এই সময় তারা এদিক-ওদিক ঘুরাফেরা ভ্রমণ না করে একস্থানে অবস্থান করে ধর্ম বিনয় পালন করে থাকেন ।
বিশ্বের অন্যান্ন স্থানের মতো বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় এই আষাঢ়ী পূর্নিমা পালন করছেন । বৌদ্ধ বিহারগুলোতে পঞ্চশীল, অষ্টশীল , বুদ্ধ পুজা ও সমবেত প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।