কারাগার থেকে যুবলীগ নেতা টিনুর হৃদয় বিদারক বার্তা।
মোঃ মহিউদ্দীন সুমন, স্টাফ রিপোর্টার।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ নেতা, ১৬ নং চকবাজার ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুর মোস্তফা টিনু চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হৃদয় বিদারক একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। ঐ বার্তায় তিনি বলেছেন- “আমি নুর মোস্তফা টিনু, ১৬ নং চকবাজার ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে আমি ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ইং রাতে আমাকে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে র্যাব-৭ গ্রেপ্তার করে। আমি আজ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত। আমি টিনু তৃনমূল পর্যায় থেকে রাজনীতি করে এসেছি। দলের জন্য নিজের জীবন যৌবন বিলিয়ে দিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে প্রানপ্রিয় জননেত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য বাস্তবায়নে জনগনের কল্যানে রাজনীতি করে এসেছি। জামাত-শিবিরের মিনি ক্যান্টনমেন্ট চকবাজার ও চট্টগ্রাম কলেজ এবং হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজকে জীবনের মায়া ত্যাগ করে আমি টিনু জামাত-শিবির মুক্ত করেছি। যার কারনে শত্রুদের রোষানলে পড়ে মিথ্যা মামলায় আজ আমি কারাগারে। আমার মামলা নিয়ে করা হচ্ছে নানান তাল বাহনা, আমি ন্যায় বিচার পাচ্ছি না। আমার রাজনৈতিক জীবনে আমি কোনোদিন কারো উপর জুলুম করিনি। কারো প্রতি অন্যায়-অবিচার করিনি। জীবনে আজ পর্যন্ত কারো হক মেরে খায়নি। আমার নামে যা অপ-প্রচার করা হয়েছে, আমার নামে যা বদনাম রটানো হয়েছে সবই আমাকে হেনস্তা করার জন্য করা হয়েছে। আমি কোনোদিন অন্যায়কে পশ্রয় দেইনি। আমি সবসময়ই আইনের প্রতি এবং আমার প্রাণপ্রিয় চকবাজার বাসীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলাম, আছি এবং আগামীতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ। প্রিয় চকবাজারবাসী এবং চট্টগ্রাম প্রশাসনের প্রতি আমার অনুরোধ হলো- আমার নাম বিক্রি করে যেখানেই অন্যায় করা হবে, যারাই আমার নাম বিক্রি করে অন্যায়-অবিচার করবে, অপকর্ম করবে, আপনারা তাদের প্রতি আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করুন। আপনারা মনে রাখবেন, আমি এইসব সমর্থন করিনা। আমি আবারও বলছি, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি স্বচ্ছ ধারার রাজনীতি পছন্দ করি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারন করে প্রাণপ্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য বাস্তবায়নে জনগণের কল্যানে আজীবন রাজনীতি করে যেতে চাই। সবার জন্য আমার দোয়া এবং ভালোবাসা রইলো। সবাই ভালো থাকবেন, নিরাপদে থাকবেন। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমার জন্য দোয়া করবেন”।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রাত ১১.০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ নেতা মাহবুব-উল হক সুমনের মায়ের জানাযার নামাজ পড়ে আসার পথে যুবলীগ নেতা নুর মোস্তফা টিনুকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭। এরপর তার বাসায় তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবী করেন র্যাব-৭। এরপর নুর মোস্তফা টিনুকে অনেক আইনি হয়রানি আর শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের পর ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৮.০০ ঘটিকায় পাঁচলাইশ থানা পুলিশের মাধ্যমে সরাসরি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরন করেন র্যাব-৭। সেই থেকে আজ অবদি চকবাজারের মাটি ও মানুষের নেতা নুর মোস্তফা টিনু কারাবন্দী। নুর মোস্তফা টিনু, তার পরিবার এবং একইসাথে চকবাজার বাসীর দাবী হলো নুর মোস্তফা টিনুকে ষড়যন্ত্রমুলক উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে টিনু বলেছিলেন, আমার কাছে বা আমার বাসায় কোনো অস্ত্র ছিলো না। আমি গিয়েছিলাম জানাযার নামাজ পড়তে। অস্ত্রটি কার সেটি একমাত্র র্যাব বলতে পারবে, আমি বলতে পারবো না। আমি সম্মানিত আদালতকে অনুরোধ করেছি সেই অস্ত্রটির ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করার জন্য। আমাকে রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা করার জন্য এটি উদ্দেশ্যমুলক একটি ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। দেশের চলমান শুদ্ধি অভিযানকে স্বার্থান্বেষী একটি কুচক্রী মহল নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করে আমার প্রতি এই ষড়যন্ত্র করেছে।
রাজপথের ত্যাগী নেতা, বিশিষ্ট সমাজ সেবক, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক নুর মোস্তফা টিনুকে কেনো এখনো জামিন দেওয়া হচ্ছে না এই নিয়ে জনমনে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে আদালতের বিচার কার্যক্রম নিয়েও। ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে টিনুর মতো সংগঠন প্রেমী অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী। জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার যেখানে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেখানে কেনো তার সংগঠনের নেতারা আদালতে হয়রানির শিকার হয়ে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেটাই এখন জনগনের প্রশ্ন। এই নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আদালত ন্যায় বিচারের মাধ্যমে অবিলম্বে নিঃশর্তে নুর মোস্তফা টিনুকে জামিন দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা চকবাজারবাসীর ও সংগঠনের নেতা কর্মীদের।