শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মিসহ নিহত ৩৮ আহত অনেক

 ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট ১২ ঘন্টারও অধিক সময় ধরে বিরামহীনভাবে চেষ্টা করে গেলেও এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ির কাশেম জুট মিলস সংলগ্ন বিএম কন্টেনার ডিপোতে বিকট শব্দে স্মরণকালের ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মিসহ নিহত হয়েছেন অন্তত ২৬ জন মানুষ এবং পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মিসহ আহত হয়েছেন আরো চার শতাধিক মানুষ। আহতদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে, ভাটিয়ারি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহতদের মধ্যে অন্তত ৭০ জনের অবস্থা আশংকাজনক। তাদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। তবে ধারণা করা হচ্ছে, শ্রমিকদের ফেলে দেয়া সিগারেটের জ্বলন্ত আগুন থেকে এই কন্টেইনার ডিপোতে শনিবার রাত নয়টার দিকে ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড হয়েছে।

স্মরণকালের এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে চট্টগ্রাম, ফেনী ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের ২৪টি ইউনিট ১২ ঘণ্টারও অধিক সময় ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং ডিপোতে সাড়ে চার হাজার কন্টেইনারের মধ্যে ১৬টি কন্টেইনারে রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ওই রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় একের পর এক কন্টেইনার বিস্ফোরণ হচ্ছে।

এতে আগুন আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। আগুনের তীব্রতায় কাছে ঘেঁষতে পারছেন না ফায়ার সার্ভিসের কর্মিরা। ১০০ গজ দূর থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে চলেছেন তারা। তবে পানি স্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠেছে এবং আশপাশের বাসা বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এক পুলিশ সদস্যের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দলও কাজ করে যাচ্ছেন। ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু ডিপোতে রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় বারবার বিস্ফোরিত হচ্ছে কন্টেইনার।

যে কারণে আগুনের কাছেও ঘেঁষতে পারছি না আমরা। প্রায় ১০০ গজ দূর থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।’ স্মরণকালের এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত ২৬ জনের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন-সীতাকুণ্ডের কুমিরা ফায়ার স্টেশনের নার্সিং

অ্যান্টেনডেন্টস মনিরুজ্জামান (৩২), ডিপোতে চাকরি করা মমিনুল হক (২৪), মো. মহিউদ্দীন (২৪), হাবিবুর রহমান (২৬) ও রবিউল আলম (১৯)। এরমধ্যে নিহত মমিনুল হক বাঁশাখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামের ফরিদুল আলমের ছেলে। নিহত মহিউদ্দীন বাঁশাখালী উপজেলার পূর্ব চারিয়ার নাপোড়া এলাকার মাহমুদুর রহমানের ছেলে। নিহত রবিউল আলম বাঁশাখালী উপজেলার চনপাড়া এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে। নিহত হাবিবুর রহমান এর বাড়ি ভোলা জেলায়। এই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসাই মো. আলাউদ্দীন তালুকদার ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তবে সবার পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শী একজন পুলিশ সদস্য বলেন, ‘চোখের সামনে কন্টেইনার এবং মানুষকে উড়ে যেতে দেখেছি। আমার মনে হয় ১৫ থেকে ১৬ জন মানুষ কয়লা হয়ে উড়ে গেছে। তবে ঠিক কতজন মারা গেছে সেটি নিশ্চিত হতে সময় লাগবে।’ চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আহতদের মধ্যে ৩০ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন জমিরুল ইসলাম (৩০), সোহেল রানা (২২), ফয়সল সিকদার (৩০), মো. চান মিয়া (৩০), নূর মোহাম্মদ (২০), রাজু (৩৮), রতন কারণ (৫৪), মো. শরিফ (২১), রাকিব (২২), ইফাদ (১৬), মো. মফিজ (৩০), মো. জাকির হোসেন (৫২), সালাউদ্দিন (৩৫), রাজিব (৪২), নজরুল (৩৮), সালাউদ্দিন (৩৫), মামুন মিয়া (২৭), মোরশেদ (৩৫), আরিফ আল মামুন (২৮), মো. রুবেল (৩১), আবদুল হাশিম (৩৮), মো. বাবলু (৩০), আলী আহমেদ (৩১), মো. জাহাঙ্গীর (৩৬), মো. মহিউদ্দিন (৩৬), মো. নাসির (৩০), ইমরুল কায়সার (২২), রাকিব ইসলাম (১৮), নোমান (২৮) ও রাশেদ (২২)। শনিবার রাতে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার চমেক হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সীতাকুণ্ডের কাশেম জুট মিলস সংলগ্ন বিএম কন্টেনার ডিপো চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ স্মার্ট গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। সাত হাজার টিইইউএস ধারণক্ষমতার এই কন্টেইনার ডিপোতে শনিবার সাড়ে চার হাজারের মতো কন্টেনার ছিল। এর মধ্যে ১৬টি কন্টেইনারে ছিল হাইড্রোজেন পার অক্সাইড।
নিজেদের অপর একটি কারখানায় উৎপাদিত অত্যন্ত দাহ্য এই কেমিক্যাল ভর্তি কন্টেইনারগুলো ডিপোর এক পাশে ছিল। এই কন্টেইনারগুলোর একটিতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। কোত্থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে তা নিশ্চিত করে জানা না গেলেও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলেছেন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড এত বেশি দাহ্য পদার্থ যে, সামান্য উৎস থেকেই এগুলোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। ডিপোতে রক্ষিত ১৬টি কন্টেনারের একটিতে শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়। খবর দেয়া হয় শিল্প পুলিশকে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিভানোর জন্য কাজ শুরু করে। পুলিশও অবস্থান নেয় ঘটনাস্থলে। প্
রায় এক ঘণ্টা ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিল ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে সীতাকুণ্ডের পুরো এলাকার পাশাপাশি হাটহাজারী, রাউজান ও মীরসরাইয়ের অনেক এলাকা কেঁপে ওঠে। অনেক উপরে উঠে যায় কন্টেইনারসহ নানা পণ্য। আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বিশাল কন্টেইনার ডিপোর পাশাপাশি সন্নিকটস্থ দুটি বাড়িতেও আগুনের বিস্তার ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। সীতাকুণ্ডের কাশেম জুট মিল সংলগ্ন কয়েক কিলোমিটার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ এত তীব্র হয় যে, তাতে বাড়িঘর এবং মসজিদের জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে। ঘটনায় পুরো এলাকায় তীব্র আতংক দেখা দেয়। অনেকেই বাড়িঘর থেকে বেরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটতে থাকেন। পুলিশ জানিয়েছে, সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের কনস্টেবল তুহিনের পা বিচ্ছিন্নসহ আরও অন্তত পাঁচ কনস্টেবল, ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মোতাহার হোসেন ও শিল্প পুলিশের একাধিক সদস্যসহ নয়জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পর ডিপোর ভিতরে রক্তাক্ত মানুষের আহাজারি শুরু হয়।
ফায়ার সার্ভিসের ১০ জনের মতো কর্মি আহত হন। ডিপোর অনেক শ্রমিক-কর্মচারী এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে এগিয়ে যাওয়া স্বেচ্ছাসেবকদের অনেকেই আহত হন। আগুনের লেলিহান শিখা এত ব্যাপক আকার ধারণ করে যে, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষেও কাজ করা কঠিন হয়ে উঠছিল। সাধারণ মানুষ দূর থেকে আহাজারি করলেও আগুন নিভানো কিংবা হতাহতদের উদ্ধারে কাছে যেতে পারছিলেন না। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন বিএম ডিপো থেকে দলে দলে আহতদের এনে রাস্তায় বিভিন্ন গাড়িতে তুলে দেয়া হচ্ছিল। অনেক অ্যাম্বুলেন্স আহতদেরকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসে। এছাড়াও সীতাকুণ্ডের সরকারি-বেসরকারি সব অ্যাম্বুলেন্স ও চট্টগ্রাম শহর থেকে অ্যাম্বুলেন্স গিয়ে অগ্নিদগ্ধদের হাসপাতালে নিয়ে আসে। ভাটিয়ারীতে শিপ ব্রেকার্স এসোসিয়েশনের হাসপাতাল এবং ভাটিয়ারী মুক্তিযোদ্ধা হাসপাতালেও বেশ কিছু অগ্নিদগ্ধকে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাশেম জুট মিলস এলাকায় ছোপ ছোপ রক্তের দাগ পড়ে গেছে। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন যানবাহনের গতিরোধ করে আহতদের হাসপাতালে পাঠান। চমেক হাসপাতালেও গাউসিয়া কমিটির স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবক আহতদের নানাভাবে সাহায্য করতে নিয়োজিত রয়েছেন। চমেক হাসপাতালে আহতদের জন্য জরুরী ভিত্তিতে ঔষধ ও রক্তের প্রয়োজন। সেই ঔষধ ও রক্তের ব্যবস্থা করছেন স্বেচ্ছাসেবক ও আহতদের স্বজনরা।
বিএম কন্টেইনার ডিপোর একাধিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা সবাই নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থেকে আগুনের সূত্রপাত। প্রচুর কন্টেইনার রয়েছে ডিপোতে। এর মধ্যে কোথায় আগুন লেগেছে, কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বলা মুশকিল।’ ডিপোর ভিতরে প্রচুর লোক কাজ করে উল্লেখ করে কর্মকর্তারা বলেন, ডিপোর বিশাল কর্মি বাহিনীর পাশাপাশি শত শত ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানের চালক-সহকারীও ভিতরে থাকেন। ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে এদের অনেকেই আগুন দেখতে বা নিভাতে ওখানে ভিড় করেন। বিস্ফোরণের পর এদের অনেকেই হতাহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা হচ্ছে।
এদিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএম কন্টেনার ডিপোর পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘হতাহতদের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। তারা নিয়মিত বেতন পাবেন। তাদের পরিবারের দায়িত্বও আমাদের। সকল কর্মিই আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে যতটুকু করা দরকার, তার সবটুকুই করা হবে। নৈতিকতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সারাজীবন হতাহতদের পাশে থাকব। যারা মারা গেছেন, তাদের পরিবার সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ পাবেন, প্রয়োজনে দ্বিগুণ ক্ষতিপূরণ দেবো। যারা মারা গেছেন তাদের পরিবার নিয়মিত বেতন পাবে। এককালীন ক্ষতিপূরণও দেবো। আহতদের জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
তারাও এককালীন অর্থ সহায়তার পাশাপাশি নিয়মিত বেতন পাবেন। চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার আমরা বহন করবো। এছাড়াও প্রশাসন যেভাবে সিদ্ধান্ত দিবে, সেভাবেই সহায়তা করা হবে। তিনি বলেন, ‘কি কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে কেমিক্যালের কন্টেইনার থেকেই আগুন ধরেছে বলে ধারণা করছি।’ তিনি দুর্ঘটনার ব্যাপারটিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে সকলকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। অপরদিকে, সীতাকুণ্ড বিএম কন্টেইনার টার্মিনালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হতাহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে চমেক হাসাপতাল কর্তৃপক্ষ। শনিবার রাতের শিফটে যেসব ইন্টার্ন চিকিৎসকের ছুটি ছিল, তা বাতিল করা হয়।
এছাড়াও মেডিকেলের স্টোর খুলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ নিয়ে আসা হয় হাসপাতালের বিভিন্ন ইউনিটে। এ বিষয়ে চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. রাজীব পালিত বলেন, ‘ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্য যারা রাতের ডিউটিতে ছিলেন না তারাও হাসপাতালে এসে যোগ দিয়েছেন। হাসপাতালের স্টোর খুলে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা উপকরণ নিয়ে আসা হয়েছে। চিকিৎসার যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’ চমেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এসে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী চট্টগ্রামের সব চিকিৎসককে চমেক হাসপাতালে এস রোগীর চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। বিএম কন্টেনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় চমেক হাসপাতালের ইমারর্জেন্সি থেকে বার্ন ইউনিট, সার্জারিসহ অন্যান্য ইউনিটগুলোতে ভর্তি হয়েছেন শত শত আহত রোগী। পাশাপাশি হতাহতদের ঘিরে হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। একদিকে এত আহত রোগীর চাপ ও অন্যদিকে শত শত স্বজনদের ভিড়ে চিকিৎকসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। তবুও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype