রবিবার-১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৩ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের অগ্রগতি এসডিজি বাস্তবায়নে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আগের চেয়ে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে। পরিবর্তনশীল বিশ্বে সমতা ও বৈষম্যহীন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে

জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ৬ বছর আগে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) স্থির করে। এতে বাংলাদেশসহ তিনটি দেশ তাদের আগের অবস্থান থেকে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে।

এই তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়া অপর দুটি দেশ হলো আফগানিস্তান ও আইভরি কোস্ট। জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) সোমবার তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে তিন দেশের অগ্রগতির বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের পর থেকে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো এসব লক্ষ্য পূরণের পথে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে।

এবারের এসডিজি সূচকে বিশ্বের ১৬৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম। চার বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালের সূচকে ১৫৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ছিল ১২০তম অবস্থানে।

২০১৫ সালের পর থেকে এসডিজি সূচকে স্কোরের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে বাংলাদেশ, আইভরি কোস্ট এবং আফগানিস্তান।

এসডিজি সূচকে ১শ’র মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ৬৩.৫। এক বছর আগে এই স্কোর ছিল ৬৩.২৬, তার আগের বছর ছিল ৬৩.০২।

বাকি দুটি দেশের মধ্যে আইভরি কোস্ট রয়েছে ১৩১তম অবস্থানে এবং এর স্কোর ৫৭.৫৬। অপরদিকে ৫৩.৯৩ স্কোর নিয়ে আফগানিস্তান রয়েছে ১৩৭তম অবস্থানে।

২০১৫ সালে জাতিসংঘে গৃহীত এসডিজিতে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭টি লক্ষ্যে নির্ধারণ করা হয়। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো এসব লক্ষ্যে কতটা অগ্রগতি করেছে তার ওপর নির্ভর করেই এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

তবে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে এবার জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১৫৭টি দেশের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে পরিমিত ভোগ ও টেকসই উৎপাদন ধরন নিশ্চিত করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব মোকাবিলায় জরুরি

কর্মব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্য বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পূরণ করে ফেলেছে। সূচকের এ দুটি অবস্থানে তাই বাংলাদেশের রঙ সবুজ।

এসডিজির ১ নম্বরে সব ধরনের দারিদ্র্যের অবসান এবং ৪ নম্বরে সকলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং জীবনব্যাপী শিক্ষালাভের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ লক্ষ্য পূরণের পথেই রয়েছে।

এসডিজি-১ এ বাংলাদেশকে রাখা হয়েছে কমলা তালিকায়। অর্থাৎ লক্ষ্য অর্জনের পথে বাংলাদেশের সামনে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এছাড়া এসডিজি-৩, এসডিজি-৬, এসডিজি-৯, এসডিজি-১৩, এসডিজি-১৪, এসডিজি-১৫,

এসডিজি-১৬ এবং এসডিজি-১৭ তে বাংলাদেশকে লাল তালিকায় রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এই আটটি ক্ষেত্রে লক্ষ্য পূরণ করতে গেলে বাংলাদেশকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

অপরদিকে এসডিজি-৪ এ বাংলাদেশকে সূচকের হলুদ তালিকায় রাখা হয়েছে। এর অর্থ হলো এসব ক্ষেত্রে লক্ষ্য অর্জনে আরও অনেক কাজ করতে হবে।

এসডিজির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে স্কোরের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি অবনতি ঘটেছে জেনেজুয়েলা, টুভালু ও ব্রাজিলের।

গত এক বছরের বেশি সময় ধরে করোনা মহামারির কারণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবনতি ছাড়াও টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

এসডিজির এবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে বেকারত্ব এবং দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। সূচকের শীর্ষে থাকা ফিনল্যান্ড

এবং সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দেশগুলোও মহামারির কারণে এসডিজির বেশ কিছু লক্ষ্য পূরণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে এবারের সূচকে ভুটানের অবস্থা সবচেয়ে ভালো। ৬৯.৯৮ স্কোর নিয়ে দেশটির অবস্থান সূচকের ৭৫ নম্বরে।

অপরদিকে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান। তালিকায় ভারতের অবস্থান ১২০ এবং স্কোর ৬০.০৭। অপরদিকে ৫৭.৭২ স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান ১২৯তম।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype