
চাটিঁগার দুই কৃতি সন্তান এম এ মালেক, ড. জ্ঞানশ্রী মহাথের(বৌদ্ধ ভিক্ষু) ও চাঁদপুর জেলার ড. গৌতম বুদ্ধ দাশকে মনোনীত করেন । বৃহস্পতিবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ বিশিষ্টজনদের নাম ঘোষণা করা হয়। দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক (সাংবাদিকতায়), চট্টগ্রাম ভেটেরেনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ(শিক্ষায়), চট্টগ্রাম নন্দন কানন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ মানবতাবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষু ড. জ্ঞানশ্রী মহাথের (সমাজসেবায়) এ পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন ।
এম এ মালেকের কর্মজীনঃ দৈনিক আজাদী’র সম্পাদক জনাব এম এ মালেক দেশের সর্বজ্যেষ্ঠ সম্পাদকদের মধ্যে একজন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক প্রকাশের কৃতিত্ব যেমন তাঁর বাবা প্রকৌশলী আবদুল খালেক, তেমনি চট্টগ্রামের প্রাচীনতম ও দেশেরও অন্যতম প্রাচীন দৈনিকটির অগ্রযাত্রা উচ্চ প্রবৃদ্ধির হারে অব্যাহত রেখেছেন এম এ মালেক । ১৬ ডিসেম্বর ’৭১- একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ-আত্মপ্রকাশ করে; ঠিক তার পরদিনই যখন সবাই উচ্ছ্বসিত আবেগে বিজয়ের আনন্দ উপভোগ করছেন, তখন মালেক সাহেব সেসময় তাঁর পত্রিকার যেসব সাংবাদিককে খুঁজে পাওয়া গেলো, তাদেরকে জড়ো করে বলেছিলেন, চলেন আমরা আজাদীটা বের করি, সেটাই হবে জাতির প্রতি আমাদের শ্রেষ্ঠ উপহার। আমি জানি এটা পত্রিকা বের করার সময় নয়, দেশের কোথাও কারো মাথায় হয়তো এ বিষয়টা আসেনি, সবাই হয়তো ডিসেম্বরের শীতার্ত দিনে স্বাধীনতার মৌতাতে মজে রয়েছেন। কিন্তু নয় মাসের যুদ্ধের কথা, হারিয়ে যাওয়া স্বজনের সন্ধান, স্বাধীনতার জন্য জাতির চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে অতন্ত্র অপেক্ষের প্রহর যখন শেষ হলো, তখন সে কথাগুলো বলার জন্য একটি সংবাদপত্রের পরিসর তো উন্মুক করে দেয়া চাই। আজাদীর সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ যুদ্ধের জন্য ভারতে গিয়ে তখনো ফিরে আসতে পারেন নি। সুতরাং মালেক সাহেবকেই আজাদী প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হয়েছিলো।
অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশঃ ১৯৮৫ সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।[৩] ১৯৮৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোল্ট্রি নিউট্রিশন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৮ সালে হিউম্যান রিসোর্চ ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি এবং ২০১২ সালে পোল্ট্রি নিউট্রিশন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[৪] কর্মজীবন তিনি ২০০০ সালে সিভাসুতে প্রফেসর হিসেবে যোগ দেন। ১ম মেয়াদে, ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি সিভাসুর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে, দ্বিতীয় মেয়াদে চার বছরের জন্য তাকে পুনরায় নিয়োগ দেন।[৫] তিনি সিভাসুর ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের অ্যানিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের অধ্যাপক।[৪] বিশ্ববিদ্যালয়টির আরেকটি অনুষদ, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান অনুষদের ডীন হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন। অ্যানিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে ৯ বছর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেট এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য।[৪] ব্যক্তিগত জীবন গৌতম বুদ্ধ দাশ ১৯৬৩ সালে চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তার বাবার নাম স্বদেশ রঞ্জন দাশ এবং তার মায়ের নাম সাবিত্রি রানী দাশ।[২
ড. জ্ঞানশ্রী মহাথেরঃ নন্দনকাননস্থ চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ, বহু প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, সর্বজন শ্রদ্ধেয়, শাসনশোভন, মহামান্য উপসংঘরাজ ভদন্ত ড. জ্ঞানশ্রী মহাথেরো ত্রয়োদশ সংঘরাজ ।তিনি রাউজান উপজেলার রুপচাঁদ নগর প্রাক্তন(ডোমখালী) গ্রামে জম্মগ্রহন করেন ১৯২৪ সালে । তিনি ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের কল্যানে কাজ করেছেন আজীবন । বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার প্রসার ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের জন্য সেবার ব্রত নিয়ে ছুটে গিয়েছেন দেশে ও বিদেশে । তিনি অনাথদের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন ।