সোমবার-১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৪ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

‌’করোনার কারণে প্রাথমিকে কোনো সাময়িক পরীক্ষা নেয়া হবে না’

‌’করোনার কারণে প্রাথমিকে কোনো সাময়িক পরীক্ষা নেয়া হবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো সাময়িক পরীক্ষা নেয়া হবে না করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের কারণে। বাতিল হতে পারে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (ইইসি) পরীক্ষাও।

তবে পরীক্ষা নেয়া না হলেও তার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের ‘বাড়ির কাজ’ দিয়ে মূল্যায়নের মাধ্যমে নতুন শ্রেণিতে তোলা হবে।

কাউকে অটোপাস দেয়া হবে না। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্মতির পর এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রতিবছর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছয় মাস পরপর দুটি সাময়িক পরীক্ষা নেয়া হয়ে থাকে। প্রথমটি নেয়া হয় জুনে।

আর ডিসেম্বরে আরেকটি পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী ক্লাসে তোলা হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এসব পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এর বিকল্প হিসেবে শিক্ষার্থীদের ‘বাড়ির কাজ’র (হোমওয়ার্ক) মাধ্যমে মূল্যায়ন করে পরের ক্লাসে তোলা হবে।

শিক্ষার্থীদের ‘বাড়ির কাজ’ করাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ) থেকে অন্তর্বর্তীকালীন শ্রেণিভিত্তিক পাঠ

পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয়দিন ‘বাড়ির কাজ’ দেয়া হয়েছে।

পাঠ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের প্রথম থেকে ক্রমান্বয়ে সব অনুশীলনীকে ‘বাড়ির কাজ’ নামে ক্রমিক নম্বর দেয়া হয়েছে।

বাংলা বিষয়ে ‘বাড়ির কাজ’ করার ক্ষেত্রে কোনো বিষয়বস্তু (গল্প, কবিতা, নাটক ও বর্ণনা) পড়তে হবে, তার নির্দেশনা ‘বাড়ির কাজ’র সাধারণ তথ্য অংশে উল্লেখ রয়েছে।

প্রতি সপ্তাহের জন্য মূল পাঠ পরিকল্পনায় ছয় দিনের পাঠ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে শুক্রবারসহ জাতীয় ছুটির দিন বাদ দেয়া হয়েছে। ইংরেজি বিষয়ের জন্য ‘বাড়ির কাজ’ করতে সহায়তা করতে বলা হয়েছে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের।

অন্যদিকে পাঠের বিষয়বস্তু ও সংশ্লিষ্ট ‘বাড়ির কাজ’ সপ্তাহভিত্তিক শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নির্দিষ্ট সপ্তাহ শেষে শিক্ষার্থীদের শিখন অগ্রগতি যাচাই ও ‘বাড়ির কাজ’ সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল তৈরি ও সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে।

অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে ‘বাড়ির কাজ’র শিটে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের মোবাইল ফোন নম্বর সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। এসব কাজ মূল্যায়ন করে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেপের মহাপরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে সাময়িক পরীক্ষা না নিয়ে শিক্ষার্থীদের

শিখন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সহায়ক এবং স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে ‘বাড়ির কাজ’ দেয়া হচ্ছে। সপ্তাহভিত্তিক তা সংগ্রহ করে শিক্ষকদের মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ কী হবে তা মাসব্যাপী সিলেবাস আকারে প্রকাশ করা হচ্ছে। তার ভিত্তিতে কোন দিন কোন পাঠ করতে হবে তা শিক্ষকরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন ও আদায় করছেন।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এবারও পিইসি-ইইসি পরীক্ষা না নেয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ইঙ্গিত দিয়েছেন,

এবারের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষাও হবে না। একই রকম সিদ্ধান্ত হতে পারে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ব্যাপারে। এ দুটিই অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা।

করোনা পরিস্থিতির কারণে উল্লিখিত চার পরীক্ষা গত বছরও নেয়া যায়নি। তবে গত বছর এ ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল আগস্টের প্রথম সপ্তাহে। এবার আগেভাগেই সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।

পিইসি ও ইইসি পরীক্ষার ভিত্তিতে পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মেধাবৃত্তি দেয়া হয়ে থাকে। আর জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে নবম-দশম শ্রেণিতে মেধাবৃত্তি পেয়ে থাকে শিক্ষার্থীরা।

এই চারটি পরীক্ষায় প্রতিবছর প্রায় ৫৫ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে থাকে। গত বছর পরীক্ষা না নেয়ায় কাউকে মেধাবৃত্তি দেয়া হয়নি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype