
নিজস্ব প্রতিবেদক : রেকর্ড সংখ্যক বৈদেশিক মুদ্রা এসেছে দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেও। ১ জুন (মঙ্গলবার) দিন শেষে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ রিজার্ভ দিয়ে আগামী ১২ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।
এর আগে চলতি বছরের ৩ মে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছিল। ২৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছিল ৪৪.০২ বিলিয়ন বা চার হাজার ৪০২ কোটি ডলার।
আর ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ৪৩ বিলিয়ন ডলার, ১৫ ডিসেম্বর ৪২ মিলিয়ন এবং ২৮ অক্টোবর রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার মজুত থাকতে হয়।
সদ্য-সমাপ্ত মে মাসে ২ হাজার ১ ‘শ ৭১ মিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা গত বছরের (২০২০) একই সময়ের তুলনায় ৬ ‘শ ৬৬ মিলিয়ন ডলার বেশি। গত বছরের মে মাসে এক হাজা ৫ ‘শ ৫ মিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।
চলতি বছর এপ্রিল মাসে ২ ‘শ ৬ কোটি ৭০ লাখ (২.০৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত বছরের (২০২০ সাল) একই সময়ের চেয়ে ৮৯ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি। গত বছরের এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের ১০ মাসে রেমিট্যান্স দুই হাজার কোটি (২০ বিলিয়ন) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি।
গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার।
২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী এক লাখ টাকা দেশে পাঠালে এর সঙ্গে আরও দুই হাজার টাকা যোগ করে মোট এক লাখ দুই টাকা পাচ্ছেন তারা।
এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেয়ার অফার দিচ্ছে। এতে করে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন বিদেশে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসছে। রফতানিও বেড়েছে। এছাড়াও আমদানি ব্যয়ের চাপ কম, দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণ সহায়তা
এবং বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বেড়েছে। তবে সামনে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধ করলে রিজার্ভ আবার কিছুটা কমে যাবে।