

এস এম নুরুল আলম খোকন, রাউজান প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ২৬ মে বুধবার দিবাগত রাত ১২ টায় নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ। কয়েক দিন ধরে নদীর সব জায়গায় ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা নিয়ে অপেক্ষা করছিল।অবশেষে রাতে নমুনা ডিম সংগ্রহ করে ডিম সংগ্রহকারীরা।হালদায় মা মাছ ডিম ছাড়ার শর্তহচ্ছে— পূর্ণিমা বা অমাবস্যার তিথি বা জো থাকতে হবে। একই সময়ে নদীরস্থানীয় এবং খাগড়াছড়ি, মানিকছড়িসহ নদীর উজানে পাহাড়ি এলাকায় প্রচুরবজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে হবে। ফলে পাহাড়ি ঢল নামবে এবং নদীতে ফেনাসহ পানিপ্রবাহিত হবে।ডিম সংগ্রহকারীরা জানান মধ্যরাতেখবর পেয়ে নদীতে জাল বসিয়ে নমুনা ডিম নিশ্চিত হই। হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, গতকাল রাতে নদীর একাধিক স্থানে কিছু নমুনা ডিম সংগ্রহ করা গেছে।
ডিম সংগ্রহকারী ও হালদার স্বেচ্ছাসেবক রোশাঙ্গীর আলম গতকাল মধ্যরাতে বলেন, আজিমেরঘাট, কাগতিয়া এলাকাসহ একাধিক স্থানে নমুনা ডিম পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে হালদা গবেষক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন,গতকাল রাতে নমুনা ডিম ছেড়েছে। সামনে বজ্রসহ বৃষ্টি হলে পুরোদমে ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা নদীতে পর্যবেক্ষণে রয়েছি।ঘূর্ণিঝড়ের সময় হালদায় ডিম না ছাড়ার কথা গবেষণায় উল্লেখ থাকলেও কেন ছেড়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার মানে হলো- নদীতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েনি।’
হালদায় ডিম ধরার দীর্ঘ ৪০ বছরের অভিজ্ঞ জেলেরা বলেন,‘কিছুক্ষণ আগে আমরা অল্প করে নমুনা ডিম সংগ্রহ করলাম। আমাদের বাপ-দাদার অভিজ্ঞতায় বলে নমুনা ডিম জোয়ারে ছাড়লে পরের ভাটায় পুরোপুরি ডিম ছাড়ে। আবার নমুনা ডিম ভাটায় ছাড়লে পরের জোয়ারে মা মাছ ডিম ছাড়ে। তবে পরিবেশ অনুকূলে না হলে পরের জোয়ারে বা ভাটায় ডিম না ছেড়ে মা মাছে আরেকটি জো’র অপেক্ষা করে।’জানা গেছে, বছরের এপ্রিল থেকে জুনের যেকোনো সময় হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। তবে এক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে পূর্ণিমা বা অমাবস্যার তিথি বা জো থাকতে হবে।
একই সময়ে নদীর স্থানীয় এবং খাগড়াছড়ি, মানিকছড়িসহ নদীর উজানে পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে হবে। ফলে পাহাড়ি ঢল নামবে এবং নদীতে ফেনাসহ পানি প্রবাহিত হবে। ঠিক এ সময়ে পূর্ণ জোয়ার শেষে অথবা পূর্ণ ভাটা শেষে পানি যখন স্থির হয় তখনই কেবল মা মাছ ডিম ছাড়ে।নদীর প্রজনন এলাকার ১০কিলোমিটার এখন সিসি ক্যামেরার আওতায় আছে। সব প্রকার বালু উত্তোলন এবং ড্রেজার ও যান্ত্রিক নৌযান চলাচল বন্ধ আছে।