শনিবার-২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ-৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ-৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

করোনায় খুব কম মৃত্যু ভুটানে, কিন্ত কেন ?

অনলাইন ডেস্ক
ভুটান দেশটি ছবির মতো । সুন্দর একটি দেশ । একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে জঙ্গল। সরকার নয়, রাজাই এখনও সে দেশের শেষ কথা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে হোটেলের ঘরের মাপ, সবই ঠিক হয় রাজদরবারে নেওয়া সিদ্ধান্তে। জিগমে ওয়াংচুকের আমলে ভুটান অনেক উন্নতি করেছে। দেশে ভারতের প্রভাব না চীনের প্রভাব বেশি, এই প্রশ্নের উত্তর যেমন বুদ্ধি করে সামলেছিলেন, তেমনই করোনা নিয়ন্ত্রণে দুই প্রতিবেশী দেশের তুলনায় অনেক বেশি সফল ভুটানের রাজা। ভারতে তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। কিন্তু কোভিড মানচিত্রে অন্যতম বিরল দেশ ভুটান। সেখানে এখনও মৃতের সংখ্যা ১। কোভিড সংক্রমণ শুরুর সময়ে রাজধানী থিম্পুর হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এক যুবকের একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু হয়। তারপর থেকে এ দেশে এক জনেরও করোনায় মৃত্যু হয়নি। দৈনিক সংক্রমণও আছে নিয়ন্ত্রণে। ভারতে যেখানে দৈনিক ৪ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, সেখানে ভুটানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১১। শুধু ভুটান নয়, পৃথিবীর একাধিক দেশ- ভিয়েতনাম, রাওয়ান্ডা, সেনেগাল- অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে করোনা সংক্রমণকে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, জনস্বাস্থ্যে বিশেষ জোর দেওয়ার কারণেই এই দেশগুলোতে করোনা তেমন করে কামড় বসাতে পারেনি। ভুটানে রয়েছেন মোট ৩৩৭ জন চিকিৎসক, ৩ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী। তা-ও লড়াইয়ে প্রায় জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে ভুটান। কারণ প্রশাসনিক পরিকল্পনা। ২০১৯-এর ৩১ ডিসেম্বর চীনে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ভুটান করোনার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে ২০২০-র ১৫ জানুয়ারি থেকে। শুরু হয় লক্ষণের ভিত্তিতে পরীক্ষা। মার্চ মাসের ৬ তারিখে ভুটানে প্রথম আক্রান্তের খবর মেলে। তার ৬ ঘণ্টা ১৮ মিনিটের মধ্যে আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ৩০০ জনকে চিহ্নিত করে পরীক্ষা শুরু হয়। পাঠানা হয় নিভৃতবাসে। এমন পরিকল্পনাই অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে এই ছোট্ট দেশকে। দেশের প্রধান অর্থনীতি পর্যটন হওয়া সত্ত্বেও গত বছরের মার্চ থেকে কড়া হাতে বিদেশিদের আগমন বন্ধ করে ভুটান। প্রায় সমস্ত জিম, রেস্তোরাঁ, শপিং মল বন্ধ করে দেওয়া হয়। মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহারে করা হয় কড়াকড়ি। যারা বিদেশ থেকে এসেছিলেন, তাদের জন্য সরকারি খরচে থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই যাতে সঙ্গে সঙ্গে সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যাওয়া যায়, তার ব্যবস্থাও করা হয়। ভুটানে চালু করা হয় ১৪ থেকে ২১ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নিয়ম। যাতে সামান্যতম সংক্রমণেরও সম্ভাবনা না থাকে। বিপুল হারে পরীক্ষা শুরু করে ভুটান। আমেরিকা, ইংল্যান্ড এবং পশ্চিমী দুনিয়ার অনেক উন্নত দেশের থেকেও ভুটানের ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা বেশি সাফল্য পেয়েছে। আজ ভারত সহ করোনায় আক্রান্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ করোনা নিয়ন্ত্রণের পাঠ নিতে পারে রাজার দেশ থেকে।
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype