শুক্রবার-১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-১৪ই রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিতে পারে : মোমেন

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের একটা বড় অংশকে নিজেদের অভিবাসন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নিতে পারে, বলেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল। ২০২১-২২ সালে অভিবাসন প্রত্যাশী শরণার্থীদের মধ্যে রোহিঙ্গাদের সুযোগ দেয়ার ব্যাপারে একথা উঠে আসে।

৬মে (বৃহস্পতিবার) মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারের সাথে নিজ কার্যালয়ে আলাপকালে এসব বিষয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

২০২১ সালে সাড়ে ৬২ হাজার এবং ২০২২ সালে ১ লাখ ২৫ হাজার শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় প্রদান করা হবে। জো বাইডেন প্রশাসনের নতুন এই সিদ্ধান্তের বেশ প্রশংসা করেন মন্ত্রী।

মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত এবং বাংলাদেশে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে বেশি সহায়তা দেয়া দেশ যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতেও তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলেও এ সময় আশা ব্যক্ত করেন ড. মোমেন।

আলোচনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, ১৮ মে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক সমন্বিত কর্মপরিকল্পনায় রোহিঙ্গাদের মানবিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমেরিকা আবারও সকলের কাছে সাহায্যের বিষয়টি তুলে ধরবে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী জানান, বাইডেন প্রশাসন কর্তৃক মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হওয়া যুদ্ধপরাধের তদন্তের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুর পাশাপাশি ড. মোমেন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভিসা জটিলতার বিষয়টি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ঢাকার মার্কিন দূতাবাস পূর্বের সকল ভিসা ইন্টারভিউ বাতিল করায় এবং নতুন ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট বন্ধ রাখায় অনেক শিক্ষার্থীই তাদের ফান্ডিং এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ হারানোসহ নানা আশঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

এর জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদশে চলমান লকডাউনে কারণে বেশ কয়েকটি ইন্টার্ভিউ স্লট বাতিল করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, লকডাউন শেষ হলেই ঢাকার মার্কিন দূতাবাস সকল শিক্ষার্থীদের ভিসা ইন্টারভিউয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।

তবে বৃহস্পতিবারের আলোচনার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন সংগ্রহের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা ও করণীয় বের করা।

আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশকে ৪০ লাখ ডোজ করোনা টিকা দেয়ার আহ্বান জানান। এর পাশাপাশি আমেরিকার কাছ থেকে আরো ২ কোটি ডোজ অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের চাহিদার কথা জানান তিনি।

ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে মিলার আশ্বস্ত করে বলেন, মার্কিন সরকার বাংলাদেশের প্রস্তাবের ব্যাপারে কাজ করছে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া কিছুটা সময় সাপেক্ষ বলেও জানান তিনি।

এ সময় মিলার বলেন, ‘আমেরিকা এখনো ভারতকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেয়নি। আশা করছি ভারত ও বাংলাদেশকে একই সময়ে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে।’

কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে জোর দেন।

এদিকে বুধবার (৫ মে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের করোনা টিকার মেধাস্বত্ব প্রত্যাহারের দাবির প্রতি সমর্থন জানানোকে সমর্থন জানিয়েছেন ড. মোমেন।

তিনি মনে করেন, এর ফলে উন্নয়শীল ও দরিদ্র দেশগুলো নিজেরা ভ্যাকসিন তৈরি করে সহজেই করোনা মোকাবিলা করতে পারবে।

এ সকল বিষয় ছাড়াও বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype