
একটা সময় ছিল যখন দর্জিপাড়া সরগরম হতো রমজানের আগে। চট্টগ্রামের টেরিবাজারের থান কাপড়ের দোকানগুলো শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, সালোয়ার, ব্লাউজ, পেটিকোট, সেলাইছাড়া থ্রিপিস ইত্যাদি বেচাকেনা শেষ করতো রমজানের প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যে।
করোনা প্রতিরোধে সর্বাত্মক লকডাউনের কারণে এবার ঈদবাজারে ভাটা পড়েছে। লকডাউনের মধ্যেই কয়েকদিন ধরে দোকানপাট খোলা রাখা হলেও বিকিকিনি নেই বললেই চলে।
টেরিবাজার থান কাপড়ের জন্য প্রসিদ্ধ হলেও এখন অনেক বড় বড় শোরুম গড়ে উঠেছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে সব শ্রেণির ক্রেতাদের কাছে রিয়াজউদ্দিন বাজরের তামাকুমণ্ডি লেন বেশ পরিচিত।
তামাকুমণ্ডি লেন ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, এখানে ১১০টি বিপণিকেন্দ্রের (মার্কেট) ১৩ হাজার দোকান রয়েছে।
মফস্বলের অনেক দোকান এখান থেকে পাইকারি পণ্য নিয়ে যায় ঈদের আগে। কিন্তু লকডাউনের কারণে এবার তা বন্ধ বললেই চলে। এতে বন্ধ রয়েছে দোকানিদের কালেকশন বা বাকি টাকা আদায়।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদে যাতে গ্রাহকেরা কেনাকাটা করতে পারেন তার জন্য প্রতিটি দোকানকে কড়া নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক রাখার বিষয়টি সিরিয়াসলি মনিটরিং করছি আমরা।
অভিজাত মিমি সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, এখানে বেশিরভাগ ক্রেতাই প্রাইভেট কারে চড়ে কেনাকাটা করতে আসেন।
লকডাউন চললেও পুলিশ কোনো গাড়িকে হয়রানি করছে না, বাধা নেই। তারপরও ক্রেতারা আসছে না ঈদের কেনাকাটা করতে।
তিনি বলেন, এখানে ২ শ ৮৪টি দোকান রয়েছে। বলতে গেলে এটা ৯০ শতাংশ নারী ক্রেতার মার্কেট। প্রতিবছরের চাহিদা মাথায় রেখে এবারও
ঈদের জন্য আকর্ষণীয় সব ড্রেস, শাড়ি তুলেছেন দোকানিরা। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের উদ্যোগ নিয়েছি আমরা।
নিউমার্কেট হিসেবে পরিচিত বিপণিবিতানের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ খোরশেদ বলেন, একদিকে লকডাউন, ব্যক্তিগত গাড়িতে মুভমেন্ট পাসের কারণে ক্রেতারা আসতে পারছেন না।
পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই করোনার প্রভাবে অস্থিরতার মধ্যে আছেন, উদ্বেগের মধ্যে আছেন। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা মনে করছেন লকডাউন তোলার পর ক্রেতা-সমাগম বাড়বে, কেনাকাটা হবে।
জহুর হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলুল আমিন বলেন, আমাদের প্রায় ১ হাজার দোকান।
এসব দোকানে বৃহত্তর চট্টগ্রামের তরুণরাসহ সব ধরনের নারী-পুরুষ কেনাকাটা করতে আসেন ঈদের আগে। কিন্তু লকডাউনের কারণে সবাই দোকান খুলে বসে থাকলেও বেচাকেনা নেই।