
করোনা পরিস্থিতির কারণে ঈদুল ফিতরের নামাজ ঈদগাহের পরিবর্তে মসজিদে পরার আহ্বান জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
করোনা ভাইরাস মহামারিতে এবারও ঈদের জামাত উন্মুক্ত স্থান বা ঈদগাহে পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে সরকার। গত বছরের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদুল ফিতরের জামাত মসজিদে আদায়ের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
তবে ঈদ জামাতের বিষয়ে আগামী ২৭ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৩ বা ১৪ মে দেশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। ঈদের দিন মুসলমানরা মসজিদ কিংবা ঈদগাহে ২ রাকাত ঈদের ওয়াজিব নামাজ আদায় করে থাকেন।
ঈদ জামাতের বিষয়ে জানতে চাইলে ২৫ এপ্রিল (রবিবার) দুপুরে ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি মনে করি ঈদের জামাতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গত বছরের মতোই থাকবে। আরও কঠিন হয়তো হবে না। আমরাও চাই গত বছরের সিদ্ধান্তটাই থাক। তবে সবকিছুই আলোচনা করে আমরা ফাইনাল করবো।’
তিনি বলেন, ‘আগামী পরশু দিন আমরা একটা সিদ্ধান্তে যাব। আমাদের একটি অফিসিয়াল মিটিং হবে, সেখানে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর যে পরিস্থিতি ছিল, এবার এর চেয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ। আমাদের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সবাইকে বলেছি বসে একটা সিদ্ধান্ত নিন। গত বছর যে সিদ্ধান্ত ছিল সেটা ঠিক রাখবেন নাকি, আরও কঠিন করবেন নাকি কিছুটা রিল্যাক্স করবেন, বসেই সেই সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে।’
উল্লেখ্য, মার্চের শেষ দিকে এসে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ ঠেকাতে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল সাত দিন বিধিনিষেধ আরোপ করে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার।
শুরুতে গণপরিবহন বন্ধ রাখা হলেও পরে মহানগরগুলোতে চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়। শেষ দিকে এসে সময় বেঁধে দিয়ে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখারও সিদ্ধান্ত আসে। পরে সরকারের সেই সিদ্ধান্ত আরও দুই দিনের জন্য বাড়ানো হয়।
কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সংক্রমণ প্রতিরোধে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল কঠোর বিধিনিষেধসহ লকডাউন আরোপ করা হয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সারা দেশে সর্বাত্মক লকডাউন আরও এক সপ্তাহ অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ায় সরকার।
কঠোর লকডাউন নিশ্চিতে আরোপ করা হয় ১৩ দফা বিধিনিষেধ। এর মধ্যে শপিংমল, দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থাকলেও, মানুষের জীবন-জীবিকা বিবেচনায় লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এদিকে চলমান কঠোর লকডাউন শেষে ২৯ এপ্রিল থেকে গণপরিবহন চলাচলে সুযোগ দেয়া হলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অন্যথায় সরকার আবার কঠোর লকডাউন দিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।