শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

সাধারণ মানুষ জীবন জীবিকা নিয়েই  চিন্তিত

‘করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েও মৃত্যু হতে পারে, আবার না খেতে পেয়েও আমাদের মৃত্যু হতে পারে। দুই দিকেই মৃত্যুর ভয় আছে। এক মৃত্যু রুখতে গিয়ে ঘরে বসে থাকলে তাতেও মৃত্যু হতে পারে। তাই আমরা কি করবো? জীবনের ঝুঁকি নিয়েই জীবিকার তাগিদে বের হয়েছি।

নিজে বেঁচে থাকার জন্য, পরিবারের জন্য এভাবেই কাজ করতে হবে আমাদের। করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই শত মানুষ মারা যাচ্ছেন। এখন বিষয় হলো মৃত্যু অবধারিত। মৃত্যু যখন হওয়ার তখনই হবে। এতে কারও হাত নেই। বাকিটা আল্লাহ ভরসা। ’

অ্যাপভিত্তিক মোটরসাইকেল চালক ইযাকুব আলী বলেন, গত বছর মহামারি করোনার পরবর্তী প্রভাবে কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে তিনি বেকার হয়ে পড়েন। তবে হাল ছাড়েননি, নিজের মোটরসাইকেলে অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা দিচ্ছেন তিনি।

ইযাকুব আলী বলেন, করোনার সংক্রমণ যে ভয়াবহ তা আমি বুঝি। কিন্তু কি করবো। করোনার ভয়ে তো ঘরে বসে থাকতে পারবো না। আমার কাছে ১০ দিন বসে খাওয়ার টাকা নেই। তাই মৃত্যুর ঝুঁকি কাঁধে নিয়েই সড়কে বের হয়েছি। কয়েকটা ট্রিপ পেলেই এক দিনের আহার তো হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি নিজেরা সচেতন থাকি আর সবসময় মাস্ক পরিধান করি তবে কিছুটা সেভ থাকতে পারবো। আমাদের বের হওয়ার কারণে পুলিশ মামলা দিচ্ছে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে উপার্জন করতে নেমেছি, ভাই দিন শেষে খাবার তো খেতে হবে। ’

রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সড়কের পাশে ইয়াকুব আলীর মত অনেকেই অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা দিতে মোটরবাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তারা সবাই জীবনের তাগিদেই বের হয়েছেন।

করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রুখতে গত ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে ৮ দিনের লকডাউন চলছে। আজ তার ৭ম দিন।

করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি আর মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তির দিকে। এদিকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান বিধি-নিষেধ তথা লকডাউন আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার।

লকডাউনের সময় জনমানুষদের ঘরে থাকার জন্য বলা হলেও কারণে অকারণে তারা বাইরে বের হচ্ছেন।

এদিকে সড়কে যানবাহন ও জনমানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করেছে পুলিশ। বিভিন্ন চেকপোস্টে পথচারীদের কাছে মুভমেন্ট পাস চেক করছে পুলিশ।

এদিকে লকডাউনের প্রথম দুই/তিন দিন চেকপোস্টগুলোতে ভালো তল্লাশী হলেও সপ্তমদিনে তা একেবারেই ঢিলেঢালা।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী মোটরসাইকেলে দু’জন চড়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা কেউ মানছেন না। পুলিশ জরিমানা করলেও কোনো সচেতনতা চালকদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।

এদিকে সিএনজি ও প্রাইভেটকার সড়কে আগের তুলনায় অনেক বেশি চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে বিভিন্ন এলাকায় মার্কেট, শপিংমল বন্ধ থাকতে দেখা গেছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype