রবিবার-১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৩ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

চূড়ান্ত করা হচ্ছে ডোপ টেস্ট বিধিমালা

চূড়ান্ত করা হচ্ছে ডোপ টেস্ট বিধিমালা ২০২১ মাদকাসক্তদের জন্য চাকরির দরজা বন্ধ রেখেই । ডোপ টেস্টে রিপোর্ট পজিটিভ এলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জেল-জরিমানার সম্মুখীন হতে হবে।

ইতোমধ্যে ডোপ টেস্ট বিধিমালা সংক্রান্ত খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন এটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের রয়েছে।
এরপর প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার পর গেজেট আকারে বিধিমালা প্রকাশিত হবে।

খসড়া বিধিমালায় ডোপ টেস্ট রিপোর্টের নেগেটিভ এবং পজিটিভের সংজ্ঞা, নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি, নমুনার ধরন, ল্যাবরেটরি এবং জনবল সংক্রান্ত বিষয়গুলো বিশদ আকারে ব্যাখ্যা করা হয়।

এতে বলা হয়, ডোপ টেস্ট রিপোর্ট ‘পজিটিভ’র অর্থ হচ্ছে মানব দেহে জৈবিক নমুনা পরীক্ষা করে মাদকদ্রব্যের উপস্থিতি পাওয়া।

‘নেগেটিভ’র অর্থ মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি অধিদপ্তরের নিজস্ব পরীক্ষাগারে ডোপ টেস্ট করাতে পারবেন বলে জানা গেছে।

বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, স্থানীয় সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট করা হবে।

এছাড়া চাকরিরত অবস্থায় কেউ মাদক সেবন করেছেন বলে সন্দেহ হলেও তাকে টেস্টের আওতায় আনা যাবে।

চাকরি ছাড়াও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের ক্ষেত্রে, কর্মরত অবস্থায় গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের সন্দেহ এবং সরকারি-বেসরকারি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কারও বিরুদ্ধে মাদক গ্রহণের সন্দেহ হলে ডোপ টেস্ট করা যাবে।

এমনকি বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের ক্ষেত্রে এবং আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের ক্ষেত্রেও ডোপ টেস্টের দরকার হবে। তবে এর বাইরেও সরকার নির্বাহী আদেশে ডোপ টেস্টের নতুন ক্ষেত্র নির্ধারণ করতে পারবে।

খসড়ায় আরও বলা হয়, ফলাফল পজিটিভ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মাদকাসক্ত বলে ঘোষণা করা যাবে। এছাড়া সরকারি,

আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত কর্মচারীদের রিপোর্ট পজিটিভ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সেক্ষেত্রে মাদকসেবনে অভিযুক্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারি আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ ধারায় শাস্তি দেয়া হবে।

প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী ডোপ টেস্টের প্রয়োজন দেখা দিলে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এরপর জৈব নমুনা হিসাবে মূত্র, রক্ত, ঘাম, নখ, প্রশ্বাসের বাতাস, মুখের লালা

এবং মানব দেহের যে কোনো অঙ্গ বা অংশবিশেষ বা দেহ তরল সংগ্রহ করা হবে। টেস্টের কাজে ব্যবহারের পর নমুনার অবশিষ্টাংশ অন্তত ছয় মাস সংরক্ষণ করতে হবে।

ডোপ টেস্টসংক্রান্ত ফি নির্ধারণ করবে সরকার। এক্ষেত্রে টেকনিকেল কমিটি সুপারিশ করবে।

বিধিমালার খসড়ায় ল্যাবরেটরি স্থাপন সংক্রান্ত পরিচ্ছেদে বলা হয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আওতায় এক বা একাধিক বিশেষায়িত ডোপ টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা যাবে।

এ জন্য পরীক্ষকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করবে নারকোটিক্স। ডোপ টেস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মাদক যেমন-অপিয়স (হোরোইন, মরফিন, কোডিন), মেথমফিটামিন (ইয়াবা),

ক্যানাবিয়ডস (গাঁজা, ভ্যাং, মারিজুয়ানা, হাশিশ) ও বেঞ্জোডায়াজিপাইন (ডায়াজিপাম, ক্লোনাজিপাম, মিডাজোলাম) সংক্রান্ত আসক্তি নির্ধারণ করা হবে।

এমনকি মদ (ইথাইল অ্যালকোহল) পানে অভ্যস্ত ব্যক্তিদেরও আসক্তি ধরা পড়বে ডোপ টেস্টে। ডোপ টেস্ট সংক্রান্ত আবেদনে নমুনা প্রদানকারীকে নাম, পিতার নামসহ ১৯ ধরনের তথ্য দিতে হবে।

খসড়া প্রস্তাবনায় ডোপ টেস্ট বিষয়ে নয় সদস্যের একটি উপদেষ্টা কমিটি রাখার কথা বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান হবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এছাড়া কমিটিতে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশ প্রধান, বিজিবি মহাপরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকরাও থাকবেন। ডোপ টেস্টের পদ্ধতি, ল্যাবরেটরির মান,

পরীক্ষা পদ্ধতির মানদণ্ড সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য পৃথক আরেকটি টেকনিকেল কমিটি থাকবে। যার প্রধান হবেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype