
প্রেসবিজ্ঞপ্তি : বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভ মেলা বাঁশখালীর ঋষিধামে আজ ২৭ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিন ব্যাপী শুরু হতে যাচ্ছে। ২০ লক্ষাধিক নারী-পুরুষ ভক্তদের সমাগম উপলক্ষে দেশের একমাত্র এই ঋষিকুম্ভ মেলাকে ঘিরে কোকদন্ডী ঋষিধাম এলাকাকে নতুন সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা থেকে ধর্মীয় বক্তা ও ঋষি, সাধু, সন্নাসী উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। ৩বছর পর পর এই ঋষি কুম্ভমেলা অনুষ্ঠিত হয়। বাঁশখালীর ঋষিধাম হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থ স্থান হিসেবে পরিচিত। এখানে শ্রীমৎ স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ প্রতিষ্ঠিত এই ঋষিধামে বিগত ৬৩ বছর আগে বাংলাদেশের একমাত্র ঋষিকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বাঁশখালীতে স্বামী অদ্বৈতানন্দ পুরী মহারাজ ১৯৫৭ সাল থেকে এই ঋষিকুম্ভ মেলার শুভারম্ভ করেন। এবার হচ্ছে বিংশতম ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভ
মেলা। ভারতের ইতিহাস প্রসিদ্ধ ৪টি স্থানে এই ঋষিকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে ভারতের ১) হরিদ্ধার ২) প্রয়াগ ৩) উজ্জয়িনী অবন্তিকা ৪) নাসিকা ( গোদাবরী তট) স্থান। এই মেলায় লাখো ভক্ত জনতা, মুনি, গুণী, ধ্যানী-যোগী, জ্ঞানী, সাধু-সন্ত, ঋষিদের সমাবেশ এবং মিলন মেলা ঘটে। যেখানে দুরত্ব ঘুচিয়ে নৈকট্য, দ্বৈত খ-ত্ব-সীমাবদ্ধতা, সংকীর্ণতা ঘুচিয়ে অদ্বৈত অখ- বা বিরাটত্ব, সীমাহীনতা, সম্প্রসারিতা তথা অসীমের বৃহৎ মহৎ সৎ উদারতা প্রসারতার স্রোতধারায় অবগাহন করে কায়িক, মানসিক, আত্মিক মুক্তির দ্বার উম্মোচন করেন।
বাঁশখালী ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভমেলা উপলক্ষে প্রতিটি অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করবেন বাঁশখালী ঋষিধাম ও চট্টগ্রাম তুলসী ধামের মোহন্ত মহারাজ স্বামী সুদর্শনানন্দ পুরী মহারাজ। তিনি বলেন, প্রতিবারের মত এবারো ঋষি কুম্ভ ও কুম্ভমেলা সকল ধর্মানুরাগী মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হবে। এখানে ভক্তদের উপস্থিত থেকে সবধরণের সহযোগিতা করবে মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবক দল। আশা করছি এবার পূর্বের চেয়ে ভক্তের সংখ্যা দ্বিগুন হবে। তিনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ এই মহতী ধর্মীয় মেলায় সকলের অংশগ্রহণের আহবান জানান।
১১ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে– শ্রীগুরু মহারাজের পূজা, বর্ণাঢ্য মহাশোভাযাত্রা, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ, সমবেত প্রার্থনা, চণ্ডীপূজা, সাধুভান্ডারা, গঙ্গাস্নান ও মহাস্নান, দশমহাবিদ্যা পূজা ও প্রতিমা প্রদর্শনী, রাধাকৃষ্ণের অভিষেক, মহাদেবের রুদ্রাভিষেক, অন্নকুট উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, বৈষ্ণব ও ঋষি সম্মেলন, ধর্মীয় মহাসম্মেলন, ষোড়শপ্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞ, বস্ত্রদান, গ্রামীণ মেলা ও দীক্ষা দান।
কুম্ভমেলা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি দানবীর সুকুমার চৌধুরী বলেন কুম্ভমেলা আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে দেশ–বিদেশ থেকে সাধু–সন্ন্যাসীরা আসতে শুরু করেছেন।
,আন্তর্জাতিক ঋষিকুম্ভ ও কুম্ভমেলা ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে কয়েকদফা বৈঠক করা হয়েছে,বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বাঁশখালীর কালীপুরের কোকদন্ডী ঋষিধামেই অনুষ্ঠিত হয় এই কুম্ভমেলা।অসংখ্য ভক্তবৃন্দ ও পূণ্যার্থীদের এই মিলনমেলাকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করতে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।দেশি-বিদেশ থেকে আসা অতিথি ও পূণ্যার্থীদের জন্য সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।এসময় তিনি আরো বলেন, ১১ দিনব্যাপী এই কুম্ভমেলা ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও মেলা উদ্বোধনসহ ধর্মীয় নানান কর্মসূচি উদযাপিত হবে ।
সংবাদ সম্মেলন করে ইতিমধ্যে প্রচার মাধ্যমেও জানানো হয়েছে এবং ঋষিকুম্ভ মেলা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা যাতে স্বাভাবিক থাকে সেজন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। উদযাপন কমিটি ও বিভিন্ন পেশা শ্রেনীর মানুষের দফায় দফায় বৈঠক সম্পূর্ণ হয়েছে। যানযট নিরসনের জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকবে। পুলিশ সার্বক্ষনিক টহলে থাকবে।