মঙ্গলবার-৫ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ-২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ-২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

আমাদের যা কিছু অর্জন, তা জাতির পিতা এবং আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হয়েছে-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

অনলাইন ডেস্ক :  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশকে ‘স্বল্পোন্নত’ দেশে উন্নীত করেন, আর আমরা মাতৃভূমিকে ‘উন্নয়নশীল’ দেশের কাতারে নিয়ে গেছি। স্বাধীনতার পর বিগত ৫১ বছরে আমাদের যা কিছু অর্জন, তা জাতির পিতা এবং আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের এই উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত হবে, ইনশাল্লাহ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজয় দিবস বাঙালি জাতীয় জীবনের এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল দিন। এদিন বিজয়ের ৫১ বছর পূর্তি হলো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের এ দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে বাঙালি জাতি।

বিজয়ের এ মাসে তিনি দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লাখ শহীদ, সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।

শেখ হাসিনা বলেন, মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। তিনি কৃতজ্ঞতা জানান সেসব দেশ ও সেই ব্যক্তিদের প্রতি, যারা মুক্তিযুদ্ধে নানাভাবে সহায়তা দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৪৮-১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয়-দফা, ১৯৬৯ সালের এগারো দফা ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত হয়ে ওঠে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমগ্র পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাঙালি জাতিকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে দেয়নি। জাতির পিতা অনুধাবন করেন, স্বাধীনতা অর্জন ছাড়া বাঙালি জাতির ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও বঞ্চনার অবসান হবে না। তাই তিনি ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। চলতে থাকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর গণহত্যা শুরু করে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার এবং তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনীকে পরাজিত করে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে জাতিরাষ্ট্র ‘বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা হলো বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠতম অর্জন। এই অর্জনকে অর্থবহ করতে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সবাইকে জানতে ও জানাতে হবে । প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমরা পৌঁছে দিবো- বিজয় দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype