
অনলাইন ডেস্ক : ভালবাসা, শ্রদ্ধায়, কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশে মহাসমারোহে সংবর্ধিত হলেন প্রাণের মানুষ লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়া
মহামুনির মানুষ কৃতজ্ঞতায়, ভালবাসায় প্রাণের উচ্ছ্বাসে পালন করেছে লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়ার প্লাটিনাম জন্মজয়ন্তী, প্রাণঢালা সংবর্ধনায় সিক্ত করেছে প্রাণের মানুষ লায়ন রূপম কিশোর বড়ুয়াকে।
পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী দুপুর আড়াইটা থেকে মানুষ সমবেত হতে থাকে মহামুনি মন্দির প্রাঙ্গণে। মহামুনির কীর্তনীয়া ও সেবক সংঘের সদস্যবৃন্দ অভ্যর্থনা উপপরিষদের সচিব স্নেহতোষ বড়ুয়া ও মেধাংকর বড়ুয়ার নেতৃত্বে ওনার পৈতৃক বাসভবন “সতীশ ভিলা” থেকে গীত-বাদ্য-কীর্তন সহকারে জয়ন্তী নায়ক ও তাঁর সহধর্মিণীকে মহামুনি মন্দিরের ১ম তোরণে নিয়ে আসলেন অভ্যর্থনা উপপরিষদের চেয়ারম্যান শেখর বড়ুয়ার নেতৃত্বে অন্যান্য সদস্যবৃন্দ তাকে অভ্যর্থনা জানান। এসময় শিশু-কিশোরেরা নেচে-গেয়ে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে তাকে মহামুনি মন্দিরে নিয়ে যান। মন্দিরের গেটে ভদন্ত আনন্দজ্যোতি ভিক্ষু উত্তরীয় পরিয়ে তাকে আশির্বাদ জ্ঞাপন করেন এবং উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। সেখানে প্রার্থনা করার পর অভ্যর্থনা উপপরিষদের সদস্য ও শিশু-কিশোরেরা তাকে অনুষ্ঠান মণ্ডপের বেলুনখচিত তোরণে নিয়ে আসলে বর-বধূ বেশে দু’জন শিশু তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে মণ্ডপে প্রবেশের আহ্বান জানান। এসময় সংবর্ধনা পরিষদের চেয়ারম্যান দেবব্রত বড়ুয়াসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি ও তাঁর সহধর্মিণী ফিতা কেটে মণ্ডপে অতিথির আসনে উপবিষ্ট হন। এরপর সঞ্চালকের আহ্বানে অভ্যর্থনা উপপরিষদের নেতৃবৃন্দ ওনাকে মঞ্চের পাদদেশে নিয়ে যান। সেখানে মঞ্চের প্রতিটি সোপানে একজোড়া করে শিশু কিশান-কিষাণী, পরী, বৈষ্ণব -বৈষ্ণবী ও উপজাতি সাজে বরণ করে হাতে হাত ধরে তাকে মঞ্চের নির্ধারিত আসনে উপবিষ্ট করায়। এসময় মঞ্চে উপবিষ্ট সভাপতি দেবব্রত বড়ুয়া তাকে পুষ্পমাল্য পরিয়ে দিয়ে বরণ করেন।এরপর মহামুনি গ্রামের ১৫ জন কৃতি তরুণ (Young Legends)কে মঞ্চে আহ্বান জানানো হয় এবং উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জানানো হয়।
এই কৃতি তরুণেরা মাটি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয় জ্ঞাপন করে ১৫টি পায়রা উড়িয়ে এই আয়োজনের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এসময় ফানুস এবং আতশবাজির আলোকচ্ছটায় আকাশ বর্ণাঢ্য রূপ ধারণ করে। এরপর সংগীত শিল্পী রিতু, অপরাজিতা, পূর্ণিমা, চমক, রণক ও অন্তিম উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করে। উদ্বোধনী সংগীত সৃজন করেছেন সংবর্ধনা পরিষদের মহাসচিব উজ্জ্বল মুৎসুদ্দী সম্পু এবং সুরারোপ করেছেন উজ্জ্বল, রিতু, কেতন, সুমঙ্গল ও অপরাজিতা। এরপর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে হেপি বড়ুয়া ও ঐশী বড়ুয়ার কম্পোজিশনে ১৩০ জন শিশু-কিশোরের অংশগ্রহণে একটি নৃত্য পরিবেশিত হয়।
এই পর্বের শুরুতে প্রকাশনা উপপরিষদের চেয়ারম্যান সাহিত্যিক, ব্যাংক কর্মকর্তা স্বপন কুমার বড়ুয়া বক্তব্য উপস্থাপনপূর্বক জয়ন্তী নায়কের হাতে স্মারক প্রকাশনা “হৃদয়জ রুদ্রাদিত্য রূপম” গ্রন্থটি জয়ন্তী নায়কের হাতে অর্পণ করেন। এরপর একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, ভাষাসংগ্রামী অধ্যক্ষ প্রতিভা মুৎসুদ্দি, রম্যসাহিত্যিক সত্যব্রত বড়ুয়া এবং জয়ন্তী নায়কের একমাত্র কন্যা অনন্যা বড়ুয়া অন্যার তিনটি অনলাইন শুভেচ্ছা বার্তা প্রচারিত হয়। এ সময় জয়ন্তী নায়ক আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এরপর প্লাটিনাম জন্মজয়ন্তী ও সংবর্ধনা পরিষদের মহাসচিব উজ্জ্বল মুৎসুদ্দী সম্পু বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
তিনি এ আয়োজনকে মহিমান্বিত ও সফল করার জন্য গ্রামবাসী ও সংবর্ধনা পরিষদের সদস্যদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি অভ্যাগতদেরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অভিবাদন জানান। এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। জন্মজয়ন্তীর কেক কাটা পর্বের জন্য জয়ন্তী নায়কের সহধর্মিণী ও অভ্যাগতদের মঞ্চে আহ্বান জানানো হয়। এই মূহুর্তে অত্যন্ত আনন্দময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, জন্মজয়ন্তীর কেকটি এনেছেন পাহাড়তলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রোকনউদ্দিন এবং ইউপি সদস্যবৃন্দ। কেক কাটার পর দূরাগত অতিথিবৃন্দ ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন।