নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, বর্তমান সরকারের একের পর এক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা অনেকটাই উন্নতি লাভ করেছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকাতেও পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে যে কোন পন্য-সামগ্রী সহজে দেশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সহজে স্থানান্তর করা যায়। নগরায়নের সাথে পাল্লা দিয়ে শহরে যন্ত্র চালিত যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থায় পরিবহন খরচ তুলনামূলক ভাবে হ্রাস পেয়েছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামকে যানজটমুক্ত ও বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে এরই মধ্যে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বেশ কিছু প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে। অন্য প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান। তিনি আজ বিকেল সাড়ে তিনটায় সিইপিজেড শাহেনশাহ টাওয়ার চত্বরে বিআরটিসি এসি/ননএসি স্পেশাল সিটি বাস সার্ভিসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, নগরবাসীর অনেকদিনের আকাংখা ও প্রত্যাশা ছিল কাটগড় থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালুর। বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবে উপলব্ধি করে গণপরিবহণের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ লাঘবে কিছুদিন পূর্বে সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার প্রেরণ করি। একই সাথে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি আলাপ করে বিষয়টি তুলে ধরলে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় আমার আহবানে সাড়া দিয়ে অতি অল্প সময়ের মধ্যে নগরীর গণপরিবহণের স্বল্পতা দূরীকরণে ১৮ টি ডাবল ডেকার ও ৪টি এসি বাস প্রদান করেন। এজন্য আমি মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও বিআরটিসির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। আজকের এইদিনে যেন আমারই চাওয়া-পাওয়ার পূর্ণতা পেয়েছে। তেমনি আমি আশা করি নগরবাসীও এর সুফল ভোগ করবেন। প্রশাসক বলেন, বিআরটিসির বাস একটি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। এর সঠিক সেবা প্রাপ্তি প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। এই অধিকার প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত ঘটলে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করুন। এজন্য তিনি প্রত্যেক বাসে বিআরটিসি’র সেবা নাম্বার ও আইনশৃংখলা বাহিনীর নাম্বার সংযোজনের নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক বাসে একটি করে অভিযোগ বাক্স রাখতে হবে যাত্রীগণ যে কোন অভিযোগ এই বাক্সে ড্রপ করতে পারবে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে কিছু কিছু জায়গায় গণপরিবহণে মহিলাদের শ্লীলতাহানী ও ইভটিজিং এর ঘটনা ঘটছে। যা অত্যন্ত দু:খজনক ও সামাজিক অবক্ষয়ের সামিল। তাই বাসে যাতে কোন নারী ইভটিজিং এর শিকার না হয় সেজন্য প্রত্যেক যাত্রীসাধারনকে অগ্রনী ভূমিকা রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে একজন নারী কোন না কোন ভাবে আমাদের আমানত। প্রশাসক এহেন কোন সমস্যা বা বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্য সরাসরি তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত যাত্রীসাধারণ প্রশাসক বরাবরে সরাসরি অভিযোগ জানান যে, বিআরটিসি’র বাস নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাবার পূর্বে মাঝ পথে যাত্রীদের নামিয়ে দেন এবং সিট ক্যাপাসিটির বাইরে যাত্রী পরিবহন করে থাকেন। এসময় প্রশাসক ছাফ জানিয়ে দেন মাঝ পথে যাত্রী নামানো যাবে না এবং সিট ক্যাপাসিটির বাইরে যাত্রীও পরিবহণ করা যাবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে বাস চালককে তাৎক্ষণিক বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হবে। এবিষয়ে উপস্থিত বিআরটিসি’র কর্মকর্তারাও একমত পোষন করেন। প্রশাসক বলেন অতীত ও বর্তমানের পার্থক্য বিবেচনা করলে বাংলাদেশের উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। যে গতিতে বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে তাতে ধারণা করা যায় যে, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ উন্নত-পরিবহন ব্যবস্থার দেশে পরিণত হবে। তিনি যাত্রী সাধারণকেও রাষ্ট্রের সম্পত্তি এ বাসগুলোকে যত্নসহকারে ব্যবহার করার অনুরোধ জানান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এডিসি বন্দর পঙ্কজ বড়ুয়া, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, সাবেক কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন। এছাড়া বিআরটিসির মাসুদ তালুকদার, মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন, সিইপিজেড থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল বড়ুয়া, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ, ৩৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ সুলতান নাসির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের, আবদুর রহমান মিয়া, আজাদ খান অভি, স্বপন সিংহ, মুনতাসির জামিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।