শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ভক্তদের চোখের জলে দেবী দূর্গাকে বিদায়

অনলাইন ডেস্ক :  সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে গতকাল বুধবার শেষ হয়েছে । সকালে বিজয়া দশমীর পূজা শেষে অশ্রুসিক্ত নয়নে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা। সেই সঙ্গে আগামী বছর ‘মা’ আবারও এই মর্ত্যলোকে ফিরে আসবেন- এই আকুল প্রার্থনাও জানিয়েছেন তারা। গতকাল বুধবার প্রতিমা বিসর্জনের আগে সকালে মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয় পূজা-অর্চনা। পূজা শেষে দেওয়া হয় দর্পণ বিসর্জন। পরে বিকেলে দেবী দুর্গা ও অন্যান্য দেব-দেবীর বিসর্জন দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে দেবী মর্ত্য ছেড়ে স্বর্গে ফিরে যান।
একই সঙ্গে চলে ভক্তদের রঙের হোলি খেলা। পরম ভক্তি নিয়ে নিজ নিজ মনের বাসনা জানিয়ে দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ান নারীরা। লাল রঙকে শক্তির প্রতীক হিসেবে মনে করে নারীরা একে অপরের মাথায় সিঁদুর ছোঁয়ান। দীর্ঘায়ু কামনা করেন পরিবারের সদস্যদের। মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যদিয়ে বিদায় জানানো হয় দেবীকে।
দেবী বিসর্জনের দিনটিতে বিষাদের পাশাপাশি আনন্দমুখর হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। হিন্দু রীতি অনুসারে নেচে-গেয়ে ঢোল বাজিয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে দুর্গা প্রতিমাকে বিসর্জন দেওয়া হয়। মন্দির-মণ্ডপে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ একে অপরের সঙ্গে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আবারও মঙ্গলবার্তা নিয়ে আগামী বছর যেন মা দুর্গা আগমন করেন, বিসর্জনকালে সেই প্রার্থনা করেন ভক্তরা।

বিজয়া দশমীর পূজার পরপরই দুপুরের পর থেকে নগরীর প্রতিটি মণ্ডপ থেকে ট্রাকে করে প্রতিমাগুলো বিসর্জনের জন্য নেয়া হয় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে এবং কালুরঘাট। এরপর সুশৃঙ্খলভাবে একে একে প্রতিমা নিরঞ্জন দেয়া হয়। এবার কালুরঘাটে প্রতিমা বিসর্জনে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় এবং দেবীকে শেষবারের মতো দর্শনে লোকে লোকারণ্যে পরিণত হয়। বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, দেবী শরতে পৃথিবীতে আসেন তার পিত্রালয়ে। আর বিসর্জনের মাধ্যমে তিনি ফিরে যান কৈলাসে তার স্বামীর ঘরে। এবার দেবী বাবার বাড়ি এসেছিলেন গজে চড়ে। আর গতকাল বিজয়া দশমীর পূজা শেষে কৈলাসে ফিরে গেছেন নৌকায় (পালকি) চড়ে।
প্রতিবছরের মতো এবারও নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থা করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা নিরঞ্জন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এবং কালুরঘাটে চান্দগাও পুজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ।প্রতিমা বিসর্জনের সুবিধার্থে চসিক পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্যান্ডেল ও মঞ্চ নির্মাণ, আলোকসজ্জা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, মেডিকেল টিমসহ সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এ উপলক্ষে পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিপুল সংখ্যক-পুলিশ আনসার সদস্যের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় র‌্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যদেরও।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ছাড়াও নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার কর্ণফুলী ঘাটে, কর্ণফুলী নদীর কাট্টলী ও মোহরা অংশে প্রতিমা নিরঞ্জন দেয়া হয়। এছাড়াও নগরীর কয়েকটি বড় বড় দীঘিতেও দেয়া হয় প্রতিমা বির্সজন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype