শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ব্রিটেনে প্রতি ৫০ জনের একজন জানে না তার বাবা কে?

ইতিহাস৭১ ডেস্ক: ব্রিটেনে প্রায় ১০ লাখ মানুষ জানেন না, তাদের আসল বাবা কে? এই সংখ্যাটা প্রতি ৫০ জনে অন্তত একজন! জীবনে একবার তারা বাবার স্নেহ, ভালোবাসা কিংবা আদর পেতে মুখিয়ে থাকেন। কিন্তু অনেকেরই অপেক্ষায় থাকতে থাকতে সময় কেটে যায়। গোটা জীবনেও সেই চির আকাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত আসে না।

সবার ভাগ্যে পিতৃ স্নেহের পরশ পাওয়া লেখা না থাকলেও কার্যত ‘অসম্ভব’কে সম্ভব করলেন ১৮ বছরের ক্যাটলিন ম্যাককিনি। বাবাকে খুঁজে পেলেন তিনি। আর বাবা-মেয়ের এই সেতুবন্ধন সম্ভব হল সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে।
ছোট থেকেই ম্যাককিনিকে বুকে আগলে রেখেছেন মা। ভরিয়ে দিয়েছেন আদরে। না চাইতেই তার হাতে এসেছে খেলনা থেকে বই-খাতা। তবুও যেন ম্যাককিনির মনের কোণে থেকে গিয়েছিল বাবার অভাব। প্রতি বছর জন্মদিনে যখন বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-পরিজনদের সামনে কেক কেটে, ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভিয়েছেন, মনে মনে একটাই প্রার্থনা করেছেন ম্যাককিনি, জীবনে যেন তিনি বাবাকে খুঁজে পান। অন্তত একবার তার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারেন। তার সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় এখন আনন্দে বিভোর উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডেরি’র ওই তরুণী।

ম্যাককিনির বাবা বাচির। আদি বাড়ি মরক্কো। তবে এখন থাকেন ডোভারে। দু’বছর আগে তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিয় হয়। ধীরে ধীরে ফোনে কথোপকথন। এগোতে থাকে কথাবার্তা। এরপরই তাদের আসল পরিচয় সামনে আসে। ম্যাককিনি জানতে পারেন, ওই ব্যক্তিই তার বাবা। আর এটা জানার পরই বাচিরের সঙ্গে দেখা করার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন তিনি। শেষপর্যন্ত গত মাসে বাচিরের কর্মস্থলে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন ম্যাককিনি।

জীবনে প্রথমবার মেয়েকে সামনে দেখতে পেয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি বাচির। আবার ১৮ বছর বয়সে এসে বাবাকে খুঁজে পাওয়ায় আবেগে ভেসে যান ম্যাককিনি। তার কথায়, “বাবাকে কোনওদিন দেখতে পাব, এটা আমার জীবনে স্বপ্নের মতো ছিল। কিন্তু সত্যিই সেটা যে পূর্ণ হবে তা ভাবতে পারিনি।”

ম্যাককিনির কথায়, বাবার খোঁজ পাওয়ার পর তাকে চমকে দিতে ঠিক করি, কিছু না বলে সটান তার কর্মস্থলে পৌঁছে যাব। গত মাসের ২৭ তারিখ বয়ফ্রেন্ড লিওনার্দো ম্যাকগ্লিনচিকে সঙ্গে নিয়ে বাবার কর্মস্থলে হাজির হন ম্যাককিনি। তখন কাফেতে সবে দিনের কাজ শেষ করছেন বাচির।

বাবার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর থেকে বেশ ভালোই সময় কাটছে ম্যাককিনির। তিনি জানতে পেরেছেন, তার আরও দু’টি ভাইবোন রয়েছে। এমনকি বাচিরের যিনি বর্তমান স্ত্রী, তিনি সন্তানসম্ভবা। ম্যাককিনি জানিয়েছেন, তারা একটি পারিবারিক ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন। মরক্কোয় তার বর্ধিত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। তাদের ঐতিহ্য, পরম্পরা নিজের চোখে দেখতে চান তিনি। তার কথায়, “এতদিন সব থেকেও যেন একটা কিছুর খামতি ছিল। এতদিনে বুঝতে পারছি, সম্পূর্ণ হয়েছে পরিবারের বৃত্ত।” সূত্র: ডেইলি মিরর, আইরিশ মিরর, এমএসএন, ইউকে নিউজ

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype