শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় শোক দিবস ॥ বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ

আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী । জাতীয় শোক দিবস । লাখো প্রাণের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র ৪ বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবারের সদস্যসহ শাহাদাত বরণ করেন। কিছু বিপথগামী সেনাবাহিনীর উচ্ছৃঙ্খল সদস্য তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে। দেশের স্থপতি ও প্রেসিডেন্টকে এমন নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করার ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

একজন রাষ্ট্রপ্রধান ও রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সাফল্য-ব্যর্থতার গঠনমূলক মূল্যায়ন হতেই পারে। তবে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার পরিবর্তে তাকে হত্যা করার মাধ্যমে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার মতো ভয়াবহ পন্থা অবলম্বন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা। জাতি তা গ্রহণ করেনি, মেনে নেয়নি। বিলম্ব হলেও তার হত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। কয়েকজনের সর্বোচ্চ রায়- কার্যকর হয়েছে। অন্যরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে।

বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে নাই কিন্তু তাঁর আদর্শ আছে, তাঁর স্বপ্ন-প্রত্যাশা আছে, আছে তাঁর প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। তাঁর আদর্শ তাঁর জীবন ও কর্মের মধ্যেই বেঁচে আছে। তাঁর স্বপ্নের কথা, প্রত্যাশার কথাও কারো অজানা নেই। কী ধরনের দেশ ও সমাজ তিনি কামনা করতেন, তাঁর আত্মজীবনী পড়লে তা সম্যক উপলব্ধি করা যায়। তিনি স্বাধীন দেশ এবং শান্তি ও সহাবস্থানমূলক সমাজের প্রত্যাশা করতেন।

এ প্রত্যাশা পূরণের জন্যই তিনি জীবনব্যাপী রাজনৈতিক লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। তিনিই আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। তিনি দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করার কাজ শুরু করেছিলেন, যা শেষ করে যেতে পারেননি।

ঘাতকরা সে সুযোগ তাঁকে দেয়নি। সোনার বাংলা গড়তে সর্বাগ্রে প্রয়োজন ছিল জাতীয় ঐক্য ও সংহতি। জাতীয় ঐক্য ও সংহতি নির্মাণে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতির মধ্যে নানা রকম বিভক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, যা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গঠনের জন্য ইতবাচক নয়।

বঙ্গবন্ধু ত্যাগের রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন বঞ্চিত, নিপীড়িত, অধিকারহারা ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য রাজনীতি করে গেছেন। তিনি গণতন্ত্রের জন্য লাগাতার সংগ্রাম করে গেছেন।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন-প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করতে হলে একনিষ্ঠভাবে তাঁর সেই দর্শন ও আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। দৃঢ়তার সঙ্গে সেই স্বপ্ন-প্রত্যাশা হৃদয়ে লালন করতে হবে এবং কর্মের মাধ্যমে তার বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।

বিগত এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় আছে বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং তাঁর আদর্শের অনুসারিদের নিয়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে।
আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন-প্রত্যাশা বাস্তবায়ন করতে হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাপূর্ণ, সহনশীল, সুশাসন এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য।

প্রয়োজন সোনার বাংলা গড়তে ব্যাপক অর্থনৈতিক বিকাশ ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডকে এগিয়ে নেয়া। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেক। দেশের মানুষ বিশ্বাস করে, তিনিই পারবেন গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক মুক্তির পথ বিনির্মাণ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। আজকের এই দিনে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্য যারা সেদিন শহীদ হয়েছিলেন, তাদের প্রতি জানাই শোক ও শ্রদ্ধা ।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype