
ইতিহাস৭১ নিউজ ডেস্ক আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। স্বাধীনতার স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বাঙালির ইতিহাসে রচিত হয় এক অমোঘ অধ্যায়। সেদিন সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্যের হাতে গোটা বাঙালি জাতি কলঙ্কিত হয়েছিল। সেদিন রাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক ভবনে ঘাতকের নির্মম বুলেটে বিদ্ধ হয়েছিলেন জাতির পিতা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, শেখ নাসের, শেখ হাসিনা, শেখ জামাল। ঘাতকের বুলেটে নিহত হন কর্নেল জামিল, বঙ্গবন্ধু। ভাতিজা মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মণি, তার গর্ভবতী স্ত্রী আরজু মণি, শ্যালক আবদুর রব সেরনিয়াবাত, শিশু বাবু, আরিফ রিন্টু খানসহ আরও অনেকে। বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা ওই সময় দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধু দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো বাঙালি তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে না। এ কারণে তিনি গণভবনের পরিবর্তে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসায় থাকতেন। যে বাড়িটি বঙ্গবন্ধুর প্রিয় ছিল বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের দোলনা। এখান থেকেই তিনি সর্বশক্তি দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা বিচারের নাগালের বাইরে ছিল। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে সক্রিয় হয় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা। আদালতের চূড়ান্ত রায় 27 জানুয়ারী, 2010 কার্যকর হয়। খুনিদের মধ্যে ছয়জনের ফাঁসি হয়েছে, পাঁচজন এখনও পলাতক। বিদেশে থাকাকালীন আরও একজন মারা গেলেও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হবে। বাঙালি জাতি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে দিবসটি পালন করবে। এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। দুপুর ১২টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়াও ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হবে।