
ইতিহাস ৭১ স্পোর্টস ডেস্ক : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে প্রতিপক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান বলেছিলেন ‘ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে বিপজ্জনক দল’। জিম্বাবুয়েও কথাটা সত্য প্রমাণ করেছে। সে জন্য ঘরের মাঠে বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে জিম্বাবুইয়ানরা।
গত বছর বাংলাদেশের কাছে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রতিটিতে হারলেও এবার আর একই ভুল করেনি স্বাগতিকরা। সিকান্দার রাজা ৯ বছর পর বাংলাদেশকে ওয়ানডে ফরম্যাটে হারাল জিম্বাবুয়ে। হারারেতে বাংলাদেশ আজ (৫ আগস্ট) জিতলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ২০ জয়ের আনন্দে ভাসতো।
হারারেতে এদিন বাংলাদেশ আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৩ রান তোলে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রাজা এবং কাইয়ার জোড়া শতকে ১০ বল হাতে রেখে পাঁচ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জিম্বাবুয়ে। রাজা ১৩৫ রানের অসাধারণ অপরাজিত এক ইনিংস খেলে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
হারারেতে এদিন বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারায় জিম্বাবুয়ে। ৬ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ের প্রাথমিক বিপর্যয় কাটায় কাইয়া এবং ওয়েসলি মাধভেরে। এই দুইজন তৃতীয় উইকেটে ৫৬ রানের জুটি গড়েন।
মাধভেরে ১৯ রান করে ফিরলে ভাঙে জুটিটি। দলীয় ১৩ ওভারের মাথায় ৬২ রানে ৩ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে এরপরের ২৮ ওভারে হারায়নি আর কোনো উইকেট। এই সময়ে রাজাকে নিয়ে ১‘শ ৯২ রানের জুটি গড়ে জিম্বাবুয়েকে জয়ের পথে রাখেন কাইয়া।
এর আগে ৩ ম্যাচে ১‘শ ১৮ রান করা কাইয়া এদিন ক্যারিয়ারের প্রথম শতক তুলে করেছেন আরো ১‘শ ১০ রান। ১‘শ ২২ বলে ১১ চার ও ২ ছয়ে এই ইনিংস সাজান কাইয়া। শেষ পর্যন্ত মোসাদ্দেকের বলে শরীফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
কাইয়া কিছুটা ধীরস্থির ইনিংস খেললেও রাজা দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন। ৮১ বলে ৮টি চার ও ৪টি ছয়ে নিজের শতক পূর্ণ করেন রাজা। অপরপ্রান্তে রান ও বলের ব্যবধান কমিয়ে জিম্বাবুয়ের জয়ের ভাগ্য নিজেদের দিকে নিয়ে নেন এই জিম্বাবুইয়ান।
শেষ পর্যন্ত ১‘শ ৯ বলে ৮টি চার ও ৬টি ছয়ে ১‘শ ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলের জয় নিশ্চিত করেন রাজা। শেষদিকে লুক জঙ্গয়ে ১৯ বলে খেলেন ২৪ রানের ইনিংস।
টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং লিটন দাসের ব্যাটে ওপেনিংয়ে ১‘শ ১৯ জুটি পায়। অধিনায়ক তামিম ব্যক্তিগত ৬২ রানে ফিরলে ভাঙে জুটিটি। আউট হওয়ার আগে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৮ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তামিম। ব্যক্তিগত ৫৭ রানে তামিম স্পর্শ করেন ওয়ানডেতে ৮ হাজার রানের মাইলফলক।
তামিমের বিদায়ের পর তিন বছর পর ওয়ানডে ফরম্যাটে মাঠে নামেন আনামুল হক বিজয়। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। মাঠে নেমেই লিটনের সঙ্গে ছয় ওভারের মধ্যে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়েন বিজয়।
এরমধ্যে অবশ্য লিটন ব্যক্তিগত ফিফটি ছুঁয়ে শতকের পথে ছুটতে থাকেন। ৭৫ বলে ফিফটি ছোঁয়া লিটন পরের ১৪ বলে তোলেন ৩১ রান। ৮৯ বলে ৯ চার ও ১ ছয়ে ৮১ রান করে পায়ের পেশিতে টান পড়ায় রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন।
লিটন ফিরলেও চারে নামা মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে দারুণ গতিতে ছুটতে থাকেন বিজয়। ৯৬ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। এরমধ্যে ৪৭ বলে ফিফটি তুলে নেওয়া বিজয় ৬২ বলে ৬ চার ও ৩ ছয়ে ৭৩ রান করে ভিক্টর নিউইচির বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন।
এম.জে.আর