
নজরুল গবেষণা কেন্দ্র গত ২৬ মে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ক্যাম্পাসের ব্যবসায় প্রশাসন মিলনায়তনে আলোচনা ও সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে।
অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। আলোচক ছিলেন, বাংলা একাডেমী পুরস্কারপ্রাপ্ত কথা সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি শিরীণ আখতার বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নজরুল গবেষণা কেন্দ্র নজরুলের ওপর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে সামনে আরও গবেষণা করা হবে।
নজরুল বাঙালী জাতিসত্তাকে এগিয়ে নিতে কাজ করে গেছেন। তা আমাদের গবেষণার বিষয় নজরুল সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গভাবে জানা। তাই কবি নজরুল ইসলাম এখনও অনাবিষ্কৃত। মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে কবি নুরুল হুদা বলেন- অসংখ্য মহিলার মাঝে নজরুল তাঁর মাকে দেখেছেন, যেমন নার্গিসের চাচী আখতারুন্নেসা, প্রমিলার জেটি-মা বিরাজ সুন্দরী, ২০২২ সাল বিদ্রোহী কবিতা লেখার একশ বছর সম্পর্কে বলেন, নজরুলের বিদ্রোহের স্বরূপ দ্রোহের কবিতা। নজরুল মানবিক বিবর্তন এনেছিলেন ব্যক্তিশক্তির সাথে সামষ্টিকশক্তির সমন্বয় রেখে স্বাধীনতার কথা বলেছেন, জাতিসত্তার মধ্যে কোনো বিবাদ না রেখে নান্দনিকতার মধ্যে জাতির শান্তি খুঁজেছেন, পৃথিবীতে জাতি রাষ্ট্র গঠনে মনুষ্য জীবনের স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, তাদের নির্মাণসহ মানুষের মুক্তির কবিতা বিদ্রোহীতে উচ্চারিত দ্রোহের পাশাপাশি তাঁর শব্দ-সঙ্গীত-চিত্র-ব্যঞ্জনায় যে নানাতলীয় মুক্তির ইশারা অন্তর্ভক্ত,তাঁর একটি সম্পূর্ণ তালিকায়নও করা যেতে পারে।
এই তালিকায়নের কেন্দ্রীয়বাণী ‘মুক্তি’। ইসলামীক স্কলার সুফি মিজান বলেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় কবি নজরুল এই মহানগণ বাঙালী জাতিকে অনেক দিয়ে গেছেন, একজন দিয়ে গেছেন আমাদের পরাধীনতার শৃংখল ভাঙ্গার মন্ত্র, আরেক মহান নেতার নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা অর্জন, এই দুই মহান ব্যক্তির প্রতি জানাই স্বশ্রদ্ধ সম্মান। বাংলা একডেমী পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন- নারী সম্পর্কে নজরুলের যে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সেই সময়কার অন্য লেখক ও কবি৩৯;র মধ্যে তা ছিল না। সাম্যের গান গাই-আমার চক্ষে পুরুষ-রমণী কোনো ভেদাভেদ নাই! সেই সময় নজরুল নারীর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে লিখেছেন তাতে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন, জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা, নজরুল নারী-পুরুষকেই যেভাবে দেখতেন, ভাবনাগুলো সেভাবে প্রকাশ করতেন। সভাপতির বক্তব্যে নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাইদ বলেন, নজরুল গবেষণা কেন্দ্র কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে চলমান রয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২৪ মে নজরুলকে ভারত থেকে বাংলাদেশে এনে জাতীয় কবি৩৯;র মর্যাদা দিয়েছিলেন, গত ২৪ মে এ দিনটির ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে।
আলোচনা সভা শেষে নজরুল শিল্পী সংগীত পরিবেশন করেন ড . প্রিয়াংকা গোপ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পার্থ প্রতীম মহাজন ও নাজরাতুন তিভা।