নকল সুরক্ষা সামগ্রী বিক্রি একজনকে অর্থদণ্ড ও জমজম কেমিক্যাল এন্ড পারফিউমারী সিলগালা
কমল চক্রবর্তী চট্টগ্রাম
কারখানায় তৈরি ও বাজারে ছড়িয়ে পড়া নকল সুরক্ষা সামগ্রীর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসাবে নগরীর জেল রোডে অবস্থিত মানিক এন্টারপ্রাইজ ও জমজম কেমিক্যাল এন্ড পারফিউমারী নামক দুটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালিত হয়। এনএসআই নগর গোয়েন্দা শাখার নজরদারীর মাধ্যমে তাদের অবৈধ ব্যবসার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে এর যথার্থতা পাওয়া যায়।
আজ শনিবার ১১ জুলাই জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ উমর ফারুকের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। অভিযানে ছিলেন এনএসআই নগর গোয়েন্দা শাখা ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক মো কামরুল হাসান।
ক্রেতা সেঁজে জমজম ক্যামিকেল এন্ড পারফিউমারী থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিতে তাদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে দোকান মালিক জানান হ্যান্ড স্যানিটাইজার তিনি সরবরাহ করতে পারবেন এজন্যে অগ্রিম টাকা দিয়ে ৮০ লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজারেরঅর্ডারও দেওয়া হয়। কিন্তু সরবরাহ করতে গেলেই গড়িমসি করতে থাকেন। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কারখানায় কাস্টমারকে আসতে নিরুৎসাহিত করতে থাকেন। তিনি ৮০ লিটার স্যানিটাইজার দিবেন তার বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট জায়গায় বা কাস্টমারের ঠিকানায়। যার ফলে ৮০ লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করতে এলে হাতেনাতে ধরা হয় মানিক এন্টারপ্রাইজের মালিক মানিক ঘোষকে।
মানিক এন্টারপ্রাইজের মালিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে স্বীকার করেন যে তিনি জমজম কেমিক্যাল ও পারফিউমারীর কাছে স্পিরিট ও মিথানল বিক্রি করেন ও হ্যন্ড স্যানিটাইজার বিক্রয়ে সহায়তা করেন ও নিজেও বিক্রি করেন । যার ফলে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রয় ও মানুষের সাথে প্রতারণার দায়ে তাকে ২০,০০০ (বিশ হাজার) টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়।
এদিকে জমজম কেমিক্যাল এন্ড পারফিউমারী দোকানের মালিক মনসুর আলী ভ্রাম্যমাণ আদালতের খবর পেয়ে দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়। তিনি কারখানায় তৈরী নকল সুরক্ষা সামগ্রী বিভিন্ন পন্থায় বিক্রি করে আসছেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তিনি অর্ডার সংগ্রহ করেন ও নির্দিষ্ট জায়গায় সরবরাহ করেন। তিনি বিভিন্ন জেলায় ট্রাকের মাধ্যমে ড্রাম ভর্তি স্যানিটাইজার সরবরাহ করেন। দোকান তালা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় জমজম কেমিক্যাল এন্ড পারফিউমারী দোকানটি সিলগালা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক জানান, গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে জেল রোড এলাকায় নকল সুরক্ষা সামগ্রী বিক্রয়ের কারখানার অনুসন্ধান করে দুটি দোকানকে শাস্তির আওতায় আনা হয়। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কিছু অসাধু ব্যক্তি অতিরিক্ত লাভের আশায় নিজেরাই বিভিন্ন প্রকার কেমিক্যাল সামগ্রী মিশ্রণের মাধ্যমে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরী করে বাজারজাত করে আসছে যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানান, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে ভেজাল বা নকল করতে উদ্যত অসাধুদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং অনেককেই কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারীর মাধমে বাকীদের ব্যাপারেও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। যাদেরকেই এসব অনিয়মের সাথে জড়িত পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।