
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রীর করোনাকালীন অর্থ সহায়তায় ভুয়া সাড়ে ৭ লাখ এনআইডিধারীকে শনাক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগে সংরক্ষিত ভোটার তথ্যভাণ্ডার ব্যবহার করে ২৩ লাখ ভুয়া টিআইএন (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) শনাক্ত করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসির এনআইডি শাখার পরিচালক (অপারেশন্স) মো. নুরুজ্জামান তালুকদার। তিনি জানান, করোনার প্রথম ধাপে ১৫ লাখ, এছাড়া আরও ৮ লাখ ভুয়া টিআইএন শনাক্ত করা হয়েছে।
আবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া নগদ টাকা সঠিক ব্যক্তির কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এনআইডি তথ্যভাণ্ডার থেকে
প্রায় ৫০ লাখ নাগরিকদের পরিচিতি যাচাই এবং দক্ষতার সঙ্গে ৭.৪৬ লক্ষ ভুয়া/দ্বৈত আইডি/ব্যক্তি শনাক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, টিআইএন নিতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র লাগে। এ ক্ষেত্রে অনেকেই হয়তো ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে ম্যানুয়ালি টিআইএন নম্বর নিয়েছিলেন। ইসি থেকে যাচাই প্রক্রিয়ায় সেগুলোর সঠিকতা পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্য প্রায় ৯ দশমিক ৭৫ কোটি ভোটারের বায়োমেট্রিকসহ ডেমোগ্রাফিক তথ্য সংগ্রহ করে একটি জাতীয় তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা হয়।
এভাবে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রস্তুত করে নিবন্ধিত সব ভোটারকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় সেই সময়।
পরবর্তীতে ২০১০ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ একটি আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি লাভ করে। বর্তমানে ইসির তথ্য ভাণ্ডারে ১১কোটি ১৭ লাখ ভোটারের তথ্য রয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে ১০ লাখ রোহিঙ্গার তথ্য। ভবিষ্যতে দেশের সব বয়সী নাগরিকদের এনআইডি দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রেখেছে ইসি।
এই বিরাট তথ্যভাণ্ডার ফাঁকি দিয়ে বর্তমানে পরিচয় লুকিয়ে বা পাল্টিয়ে আর কোনো কাজই করা প্রায় অসম্ভব। কেননা, নির্বাচন কমিশনের
এই তথ্যভাণ্ডরের সেবা নেওয়ার জন্য ব্যাংক-বিমা-আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রভৃতি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ১৪৭টি প্রতিষ্ঠান চুক্তি করেছে।
ফলে বেওয়ারিশ মরদেহ যেমন শনাক্ত করা যাচ্ছে ইসির সার্ভার থেকে, তেমনি পাওয়া যাচ্ছে কারো ব্যাংক হিসাবও। এছাড়া মোবাইল ফোন বা কোনো পরিষেবা নিতেও বর্তমানে এনআইডি ব্যবহার করতে হচ্ছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেসব প্রতিষ্ঠান তথ্যাভাণ্ডার থেকে নাগরিকের তথ্য যাচাই করে নেন, সেজন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ
পরিশোধ করতে হয় সেসব প্রতিষ্ঠানকে। ফলে এদিক থেকে নির্বাচন কমিশন প্রতি বছর সরকারি কোষাগারে একটি বিরাট অংকে রাজস্ব জমা দিচ্ছে।