রবিবার-১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৩ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

বসন্তের আগমনে প্রকৃতির সঙ্গে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা

অনলাইন ডেস্ক : ডালে ডালে আজ বসন্তের আগমনী গান। ফুলে ফুলে ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। নতুন সংশোধিত বর্ষপঞ্জিতে পহেলা ফাল্গুন অর্থাৎ বসন্তের প্রথম দিনেই হচ্ছে ভালোবাসা দিবস।

সবকিছুই জানান দিলেও সংশোধিত বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি পহেলা ফাল্গুন। সঙ্গে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। ঋতুরাজকে স্বাগত জানাতে প্রকৃতির আজ এত বর্ণিল সাজ। বসন্তের আগমনে প্রকৃতির সঙ্গে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা। সব কুসংস্কার পেছনে ফেলে, বিভেদ ভুলে, নতুন কিছুর প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা নিয়ে বসন্তের উপস্থিত। তাই কবির ভাষায় ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’।

ইংরেজি বর্ষপঞ্জির ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয় সারাবিশ্বে, আর বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বসন্তের প্রথম দিন অর্থাৎ পহেলা ফাল্গুন ছিল ১৩ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু বাংলা বর্ষপঞ্জি সংশোধনের পর একই দিনে পড়ছে বসন্ত উৎসব আর ভালোবাসা দিবস।

এই মাসে বাঙালির দ্রোহ, প্রেম আর প্রকৃতি মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। আদিকালে গঙ্গার পুরোনো খাতের পাশের জলার মাঝে থাকা শুকনো জায়গাটায় যেদিন জনবসতি স্থাপিত হলো, সেদিন অধিবাসীরা ঢাক তথা পলাশ গাছে ছাওয়া জায়গাটির নাম রেখেছিলো ঢাকা। আজকের আধুনিক মহানগরীটিতে প্রতিবছর রক্তিম পলাশভর্তি গাছগুলো নাগরিক ব্যস্ততায় টিকে থাকার লড়াইয়ের সময় মনে করিয়ে দেয় বসন্ত এসে এগেছে।

বাঙালির জীবনে বসন্ত চিরকাল প্রেমভাব জাগ্রত করেছে। দখিনা বাতাস তার মনে লাগিয়েছে দোলা সেই আদিকাল থেকে। কিন্তু এই বসন্তেই বাঙালি প্রয়োজনে অগ্নিমূর্তি ধারণ করেছে। পঞ্জিকার বদলে আবারও এক সন ধরে ১৪ ফেব্রুয়ারি ফিরে আসছে ফাল্গুন। যে দিনটি বিশ্বব্যাপী ভালোবাসা দিবস পালন হয়। কেউ একজন একবার বলেছিলেন, সারা বিশ্বের ভালোবাসার দিন আছে একটা আর বাঙালির জন্য আছে দুটো মাস, পুরো কাল।

বসন্ত ও ভালোবাসা মিলেমিশে একাকার হয়ে রাজধানীসহ সারা দেশ আজ মেতে উঠবে ফাল্গুনী আমেজে। ফাগুনের আগুনলাগা উচ্ছ্বাস প্রিয়তমের হাতে হাত রেখে প্রিয়ার কোমল হৃদয় ব্যাকুল হয়ে উঠবে ঘরবাঁধার স্বপ্নে। ঋতুরাজের দখিনা বাতাস তাদের হৃদয়-জমিনে ভালোবাসার ঢেউ তুলবে। বাসন্তী রঙের শাড়িতে খোঁপায় হলুদ গাঁদা আর মাথায় ফুলের টায়রার সুষমার শৈল্পিকতা ফুটে উঠবে তরুণীদের। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তরুণরাও কম যাবে না। তরুণরাও ধরা দেবে হলুদ পাঞ্জাবিসমেত একরাশ ফাল্গুনী সাজে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সর্বত্রই তারুণ্যের উন্মাদনার ঢল নামবে। বসন্ত আর ভালোবাসার মিশেলের এমন দিনকে বরণ করতে ফুলের দোকান আর মার্কেটের শাড়ি-পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে গত কয়েকদিন ধরেই বেশ ভিড়।

বসন্তমিশ্রিত ভালোবাসার এমন দিনে পরস্পরের শুভেচ্ছায় সিক্ত হবে দুজন। ফুল, কার্ড, চকলেট বিনিময়ের পাশাপাশি কবিতা ও ছন্দমিশ্রিত ক্ষুদে বার্তায় ভরে যাবে মুঠোফোনের ইনবক্স। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে যাবে পরানের গহিনের উষ্ণতা। বিনোদন কেন্দ্র ও পার্কসহ অনেক জায়গায় ভালোবাসা দিবস এবং বসন্তের ছোঁয়া থাকবে।  স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরিচালিত হবে। এ ছাড়াও দেশের নানা জায়গায় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নাচ, গান, আবৃত্তিসহ নানা আয়োজনে পহেলা ফাগুন ও ভ্যালেনটাইন’স ডে উদযাপন করবে। তবে করোনা মহামারির কারণে এবারের সব আয়োজন থাকবে স্বল্প পরিসরের ও সীমিত সময়ের জন্য।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype