শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

আবহমানকাল ধরে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আবহমানকাল ধরে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করে বাংলাদেশকে বিশ্ব সভায় একটি উন্নত ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর।

শুক্রবার ‘আন্তর্জাতিক হিন্দু সম্মেলন-২০২৩’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দেওয়া বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
উন্নত-শান্তিপূর্ণ দেশগড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তুলি।’

বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময়কার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত দেশে ধর্মের নামে বিভেদ-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। ১৯৯১-১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙার ধুয়া তুলে ২৮ দিন সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালায়। তখন ৩৫২টি মন্দির পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকার মন্দিরগুলোও ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার সমগ্র বাংলাদেশে মন্দির নির্মাণ করে দেয়। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের জায়গা নিয়ে একটা সমস্যা ছিল, আমরা তার সমাধান করে দিয়েছি। ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির উন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে। ’

হিন্দু ধর্মালম্বীদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের কল্যাণে আমরা বহু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা অর্পিত সম্পত্তি আইন বাতিল করেছি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তি মালিকানা দেওয়ার ক্ষেত্রে হেবা আইনের নিয়ম মাফিক নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে সম্পত্তি হস্তান্তর করার সমান সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন প্রণয়ন করেছি। এ ট্রাস্টের তহবিল ২১ কোটি টাকা হতে বাড়িয়ে ১০০ কোটি টাকা করে দিয়েছি। আমরাই প্রথম দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়নে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিই। ৪১ হাজার ২১৬ জন পুরোহিত/সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সারাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ২ হাজার ৩৫১টি মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে আমরা ২৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। ১ হাজার ৬০০টি মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় তীর্থ ভ্রমণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি বৎসর শারদীয় দুর্গাপূজায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে বিশেষ অর্থ প্রদান করা হয়। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ, মানব কল্যাণের উদ্দেশ্যে গঠিত দেশের অন্যতম একটি সামাজিক সংগঠন। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এ সংগঠনটি জনহিতকর বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আর্তমানবতার সেবায় অসহায় অবহেলিত মানুষের জন্য নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ সংগঠন সর্বদা মানুষের পাশে থাকবে এবং সংগঠনের সকল পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের আত্মনিবেদনে দেশের অসহায় অবহেলিত মানুষের কল্যাণে সামাজিকভাবে আরো তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে-এ আমার প্রত্যাশা।’

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype