বুধবার-১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৬ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

বদলে যাওয়া বাংলাদেশের চিত্র ভারতের জনগণ জানতে পারবে- তথ্যমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত চৌদ্দ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। বাংলাদেশ এখন মেট্রোরেলের দেশ, পদ্মা সেতুর দেশ, নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল এর দেশ। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াবার দেশ। বিশ্বে উন্নয়নের মডেল হিসেবে চর্চা হয়-বাংলাদেশ তেমন একটি দেশ। এ বদলে যাওয়া বাংলাদেশের গল্প লেখনীর মাধ্যমে ভারতীয় পত্র-পত্রিকায় উঠে আসবে এবং এর মাধ্যমে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের চিত্র ভারতের জনগণসহ বিশ্ববাসী জানতে পারবে।
আজ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সফররত ভারতের সাংবাদিকদের সাথে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় কলকাতা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কিংসুক প্রামাণিক বলেন, সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভূতপুর্ব উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি দেখে বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। বদলে যাওয়া বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা বিশ্বে মডেল হিসেবে ভাবা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ক্লাব সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি ¯েœহাশিষ সুর, আসাম সাংবাদিক নেতা মনোজ কুমার গোস্বামী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সিনিয়র সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি শহিদুল আলম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি তপন চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাক ম. শামসুল ইসলাম, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমূখ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দু’দেশের ব্যবসায় বাণিজ্যের অনেক প্রসার হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের জনগণ অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ভারতীয় সৈনিকরা বুক চিতিয়ে লডাই করেছে। বুকের রক্ত দিয়েছে। কাজেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ। এ বন্ধন সবসময় অটুট থাকবে। তিনি বলেন, ভৌগোলিক কারনে দু’দেশের মাঝখানে কাাঁটাতারের বেড়া থাকলে মননে মানসিকতায় সংস্কৃতি চর্চায় সর্বোপরি দু’দেশের জনগণের ভালবাসা এক ও অভিন্ন। কাঁটাতারের বেড়া এ ভালবাসা চিহ্ন করতে পারেনা।
অনুষ্ঠানে দু’প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ পরস্পর সম্মাননা স্মারক বিনিময় করেন। ভারতীয় সাংবাদিকরা এ সময় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তাদের রচিত বেশ কয়েকটি গবেষণাধর্মী বই ও প্রকাশনা মন্ত্রীর নিকট হস্তান্তর করেন।
এর আগে সকালে ভারতীয় সাংবাদিক দল চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পৌঁছলে চট্টগ্রাম পিআইডির উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীর এর নেতৃত্বে তথ্য মন্ত্রণালয়াধীন সবকটি দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ তাদের স্বাগত জানান। এসময় তাদের সাথে একই বিমানে আগত তথ্যমন্ত্রীকেও স্বাগত জানানো হয়।
ভারতীয় সাংবাদিকদের এ দলে কলকাতা প্রেসক্লাবের ২৫ ও আসাম প্রেসক্লাবের ৯ জনসহ মোট ৩৪ জন সিনিয়র সাংবাদিক রয়েছে।
পরে সফররত সাংবাদিক দল বিমানবন্দর থেকে কর্ণফুলী টানেল পরিদর্শনে যান। কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী টানেল মুখে সাংবাদিকদের স্বাগত জানান। পরে সেখানে তাদের টানেল কার্যক্রম বিষয়ে তিনি সংক্ষিপ্ত ব্রিফ দেন। এসময় প্রকল্প পরিচালক জানান, কর্ণফুলী টানেলের শতকরা ৯৫.৫ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখন চলছে শেষ মূহুর্তের কার্যক্রম। সব কাজ শেষে আগামী মার্চ নাগাদ টানেলটি যান চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
খরস্রোতা কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে বৃহৎ ও সুদৃশ্য এ টানেল দেখে সফররত সাংবাদিকগণ বিস্ময় প্রকাশ করেন। কয়েকজন তো উচ্চসিত প্রশংসা করেন। তারা বলেন, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ যে বহুদুর এগিয়ে গেছে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। তারা বলেন, কলকাতায় মেট্রোর জন্য ছোট আকারের একটি টানেল থাকলেও কর্ণফুলীর মতো এতোবড় টানেল নেই। তারা বিভিন্ন প্রশ্ন করে টানেলের বিষয় বিষদভাবে অবহিত হন।
পরে সাংবাদিক দল কর্ণফুলীর নদীর তীর ঘেষে নির্মিত সুদৃশ্য মেরিন ড্রাইভ ও চলমান বে- টার্মিনালের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। এসব উন্নয়ন কার্যক্রম দেখে প্রতিনিধিদল বিস্ময়ে অভিভূত হন। তারা বিভিন্নভাবে এসব কার্যক্রম ফ্রেমবন্দী করেন। সবাই সেলফিও তোলেন।
দুপুরে প্রতিনিধি দল পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব পরিদর্শন করেন। বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এর স্মৃতিধন্য এ স্থাপনা দেখে তারা আবেগী হয়ে পড়েন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিকন্যা প্রীতিলতার স্মৃতির প্রতি তারা এসময় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও ৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামে চট্টগ্রামবাসী বেশি অবদান রেখেছে। আগামীতেও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে চট্টগ্রামবাসীর ভূমিকা সবার আগে থাকবে। চট্টগ্রাম বাংলাদেশকে পথ দেখাবে।
বিকেলে সফররত সাংবাদিকদল বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র ও বাটালি হিল পরিদর্শন করেন।
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype