শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

নিউজিল্যান্ডকে করতে হবে অসাধারণ কিছু

ইংল্যান্ডের সামনে টেস্ট ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে এক সিরিজে তিনবার আড়াইশর বেশি রান তাড়া করে জয়ের হাতছানি। নিউজিল্যান্ড আছে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াইয়ে। হেডিংলি টেস্টের চার দিন শেষে প্রথমটির সম্ভাবনাই এখন বেশি। অলিভার পোপ ও জো রুটের দারুণ জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ইংলিশদের হাতে।

সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ২৯৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় রোববার স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৮৩ রান। শেষ দিনে জয়ের জন্য তাদের দরকার আর ১১৩ রান, হাতে উইকেট ৮টি। সিরিজে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ১০৫ বলে ৮১ রানে অপরাজিত আছেন পোপ। প্রথম দুই টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান রুট খেলছেন ৮০ বলে ৫৫ রানে। দুইজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ১৩২।
উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য এখনও যথেষ্ট ভালো। লর্ডসে ২৭৭ ও ট্রেন্ট ব্রিজে ২৯৯ রান তাড়া করে জেতা ইংল্যান্ড শেষ দিন শুরু করবে তাই ফেভারিট হিসেবে। টানা তৃতীয় হার এড়াতে কেন উইলিয়ামসনের দলকে করে দেখাতে হবে অসাধারণ কিছু।

নিউজিল্যান্ড চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় মূলত ড্যারিল মিচেল ও টম ব্লান্ডেলের দৃঢ়তায়। সিরিজে দুজনের চতুর্থ শতরানের জুটির সৌজন্যে কিউইদের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ৩২৬ রানে। টানা পঞ্চম পঞ্চাশোর্ধ ইনিংসে মিচেল করেন ৫৬ রান। ৮৮ রানে অরপাজিত থাকেন ব্লান্ডেল। ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের লক্ষ্যটা তিনশর নিচে রাখেন বাঁহাতি স্পিনার জ্যাক লিচ।

নিউজিল্যান্ড চতুর্থ দিন শুরু করে ৫ উইকেটে ১৬৮ রান নিয়ে। লিড তখন কেবল ১৩৭ রানের। আগের দিন ভালো শুরুর পর ৩৫ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলকে পথে ফেরাতে আরও একবার দারুণ দৃঢ়তায় জুটি বাঁধেন মিচেল ও ব্লান্ডেল। ৪ রান নিয়ে দিনের ব্যাটিং শুরু করা মিচেল ১৭ রানে বেঁচে যান রিভিউ নিয়ে। লিচের বলে তাকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। বলটা স্টাম্প মিস করে যেত। প্রথম সেশন দুই ব্যাটসম্যান কাটিয়ে দেন নিরাপদে। বিরতির পর ব্লান্ডেল ফিফটি করেন ১০৫ বলে। ১৪৫ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন মিচেল।

নিউজিল্যান্ডের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে টানা পাঁচ ইনিংসে পঞ্চাশ স্পর্শ করলেন তিনি। ফিফটির পর মিচেল আরেক দফা রক্ষা পান আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে। অবশ্য ম্যাথু পটসের ওই ওভারেই তার ইনিংস থামে এলবিডব্লিউ হয়েই। ভাঙে ১১৩ রানের জুটি। ইংল্যান্ডে তিন বা এর কম ম্যাচের সিরিজে প্রথম কোনো সফরকারী ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচশ রানের মাইলফলক ছুঁয়ে তিনি সিরিজ শেষ করলেন ৫৩৮ রান নিয়ে।

মিচেল ও ব্লান্ডেলের জুটির রান সিরিজে ৬ ইনিংসে ৭২৪। কোনো সিরিজে পঞ্চম উইকেটে বা এর নিচের উইকেটে কোনো জুটির সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি। একই সঙ্গে টেস্ট ইতিহাসে পঞ্চম জুটি হিসেবে কোনো সিরিজে চারটি শতরানের জুটি উপহার দিলেন তারা। মিচেলের বিদায়ের পর নিয়মিত উইকেট হারায় নিউ জিল্যান্ড। ৫২ রানে তাদের শেষ ৫ উইকেট তুলে নেয় ইংল্যান্ড। শেষ চার জনই লিচের শিকার। দুই ইনিংসেই ৫টি করে ম্যাচে প্রথমবার তিনি ১০ উইকেট নেন ১০৬ রানে।

রান তাড়ায় ইংল্যান্ডের শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। পঞ্চম ওভারে রান আউটে কাটা পড়েন অ্যালেক্স লিস। আরেক ওপেনার জ্যাক ক্রলি ২৫ রান করে কাভারে ক্যাচ দেন মাইকেল ব্রেসওয়েলের বলে। ৫১ রানে ২ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন পোপ ও রুট। অনেক চেষ্টা করেও দুজনের জুটি আর ভাঙতে পারেনি সফরকারীরা। এর মাঝে পোপ ফিফটি করেন ৬৬ বলে। রুটের পঞ্চাশ ছুঁতে লাগে ৭৮ বল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩২৯

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩৬০

নিউজিল্যান্ড ২য় ইনিংস: ১০৫.২ ওভারে ৩২৬ (আগের দিন ১৬৮/৫) (মিচেল ৫৬, ব্লান্ডেল ৮৮*, ব্রেসওয়েল ৯, সাউদি ২, ওয়্যাগনার ০, বোল্ট ৪; ব্রড ২৪-৭-৬৩-০, লিচ ৩২.২-১২-৬৬-৫, পটস ২৫-৫-৬৬-৩, ওভারটন ১৪-২-৬১-১, স্টোকস ৪-০-৩০-০, রুট ৬-০-২৯-১)

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: (লক্ষ্য ২৯৬) ৩৯ ওভারে ১৮৩/২ (লিস ৯, ক্রলি ২৫, পোপ* ৮১, রুট ৫৫*; বোল্ট ৯-২-১৩৭-০, সাউদি ১২-৪-৩২-০, ব্রেসওয়েল ১১-০-৭০-১, ওয়্যাগনার ৭-১-৩৩-০)

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype