শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

হালদায় ডিম সংগ্রহ শুরু করলেও ডিমের পরিমাণ কম

দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ফের ডিম ছেড়েছে মা মাছ। বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে ডিম দেওয়া শুরু করে কার্প জাতীয় মা মাছ। সকাল থেকে ডিম সংগ্রহকারীরা পুরোদমে নেমে পড়েন ডিম সংগ্রহে। এ নিয়ে এবার তৃতীয়বারের মতো ডিম ছেড়েছে হালদার মা মাছ।

হালদা নদীতে তৃতীয় দফায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মা মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে। তবে তখন নদীতে সংগ্রহকারীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে নদীতে দুই শতাধিক নৌকা, বাঁশের ভেলা ও জাল নিয়ে পাঁচ শতাধিক সংগ্রহকারী ডিম সংগ্রহ শুরু করলেও ডিমের পরিমাণ কম বলে তারা জানিয়েছেন। এর আগে ১৬ মে ভোরে প্রথম দফায় হালদায় ডিম ছেড়েছিল মা মাছ। সেদিন রাতে দ্বিতীয় দফায় ডিম ছাড়ে; তবে ওই দফায় সংগ্রহ করা ডিমের পরিমাণও ছিল খুবই কম।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে মা মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে। তবে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বেশি পরিমাণ ডিম পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। ডিম সংগ্রহকারী নুরুল আবছার বলেন, বজ্রবৃষ্টি দেখে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় আমার ৪টি নৌকা আর দৈনিক চুক্তি ভিত্তিক আরও ৯ জন নিয়ে ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে অবস্থান করি। বুধবার ভোর থেকে নমুনা ডিম পেলেও দুইদিন বৃথা সময় নষ্ট করে বৃহস্পতিবার রাতে নদী থেকে ওঠে পড়ি। এর মধ্যে খবর পাই মা মাছ ডিম ছেড়েছে।

শুক্রবার ভোরে নদীর আজিমের ঘাট এলাকা থেকে তিনি ও তার লোকজন ৪ বালতি ডিম সংগ্রহ করেছেন। অন্যদিকে চারটি নৌকা নিয়ে ৭ বালতি ডিম সংগ্রহ করেছেন বলে জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর। মাছুয়া ঘোনার ডিম সংগ্রহকারী মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, তিনিসহ এলাকার ডিম আহরণকারীরা রাতে প্রায় ৮ বালতি ডিম সংগ্রহ করছেন। মদুনাঘাট এলাকার ডিম সংগ্রহকারী আশু বড়ুয়া জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বজ্রসহ ঢল ও বৃষ্টিপাত দেখে তিনি ডিম আহরণের জন্য নদীতে নামেন। তিনি দুই/আড়াই বালতির মত ডিম সংগ্রহ করতে পেরেছেন। পরে শুক্রবার দুপুরের দিকে পুনরায় ডিম সংগ্রহের জন্য নদীতে নামেন। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পীযুষ প্রভাকর বলেন, হালদায় মা মাছ পুরোদমে ডিম ছেড়েছে। আমরা নদীতে অবস্থান করছি, ডিম সংগ্রহের তথ্য সংগ্রহ করছি। কী পরিমাণ ডিম সংগ্রহ হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাউন্ট চলছে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরিমাণ সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রদান করা যাচ্ছে না।

হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, জো, বজ্রসহ বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের তোড় মা মাছের ডিম ছাড়ার উপযুক্ত পরিবেশ। পরিবেশ পেয়ে ডিম ছেড়েছে মা মাছ। তবে ডিমের পরিমাণ কম ছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন। মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, এবারের পাঁচটি জো শেষ হল। আগামী ২৩ থেকে ৩০ জুন শেষ জো। তখনও ডিম ছাড়তে পারে।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype