
নওগাঁয় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। জেলার প্রধান সরকারি হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে। শয্যা খালি না থাকায় মেঝেতে রেখে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। কম খরচে চিকিৎসা নিতে ডায়রিয়া আক্রান্ত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীরাই সরকারি হাসপাতালে বেশি ভর্তি হচ্ছেন। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও কিশোর।
চিকিৎসক ও নার্সরা বলছেন, তীব্র গরমের কারণে হাসপাতালে শয্যার চেয়ে বেশি সংখ্যক ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। আগে যেখানে গড়ে ৪০ থেকে ৫০জন রোগী চিকিৎসা নিতেন, এখন সেখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০০জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তীব্র গরম, খাবারে অসর্তকতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।
সরেজিমেন দেখা যায়, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ডায়রিয়া রোগীতে ঠাসা। একই বেডে দুইজন-তিনজন শিশুকে রাখা হয়েছে। তাতেও শয্যা সংকুলান না হওয়ায় কেউ কেউ মেঝেতে বিছানা পেতে ঠাঁই নিয়ে শিশুদের চিকিৎসা করাচ্ছেন।
নওগাঁ শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘রাতের খাবার খেয়ে শোয়ার পর থেকেই ডায়রিয়া শুরু হয় ছেলের। খাবার স্যালাইন ও ওষুধ খাওয়ানোর পরেও ভালো না হওয়ায় ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করাই। শয্যা না থাকায় মেঝেতে রেখেই চিকিৎসা করাতে হচ্ছে।’
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ মৌসুমী খাতুন বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বেড়েছে। রোগীদের সামলাতে গিয়ে নিজেদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’
নওগাঁ সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েকদিনে প্রচণ্ড গরমের কারণে মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ডায়রিয়া মূলত পানিবাহিত রোগ। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে সবাইকে। হাত সব সময় জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।’
নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল বলেন, ‘রোগীর চাপ সব সময় থাকে। শয্যা সঙ্কটও থাকে। তবে হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ার কারণে শয্যা সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে। তবে ওষুধ সরবরাহসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে।’