বৃহস্পতিবার-১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১৭ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব উপজেলা পর্যায়ে অগ্নিদগ্ধ রোগীরা চিকিৎসা পাবে

অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ ও সতর্কতার সঙ্গে দাহ্য পদার্থ ব্যবহারের ব্যাপারে সুপরিকল্পিতভাবে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার উপজেলা পর্যায়ে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে।

আজ শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি (এসএইচএনআইবিপিএস)-এ সিক্সথ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন প্লাস্টিক সার্জারি-২০২২ এবং ‘মুজিব কর্নার’ ও ‘বঙ্গবন্ধু গ্যালারি’ উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা উপজেলা পর্যায়ে দগ্ধদের চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সোসাইটি অব প্লাস্টিক সার্জন অব বাংলাদেশ (এসপিএসবি) অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে এবং ওই কমপ্লেক্সগুলোতে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামে সজ্জিত করার বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মানুষের দোরগোড়ায় এই বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে- তাঁর সরকার প্রতিটি বিভাগে পৃথক ও স্বনির্ভর বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
ফরিদপুর জেলায় একটি ১০০ শয্যার প্লাস্টিক সার্জারি ও বার্ন ইউনিট স্থাপনের কথা তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, প্রতিটি বড় জেলায় এ ধরনের ইউনিট প্রয়োজন।

২০১৩-২০১৪ সালে আন্দোলনের নামে বিএনপি জামায়াতের জোটের পেট্রোল বোমা হামলায় নিরীহ মানুষের মৃত্যুর জন্য তিনি তাদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা কখনোই জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করেনি।’

তার সরকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল (ডিএমসিএইচ)-এ ৫০ শয্যার বার্ন ইউনিট স্থাপন করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরো বলেন, ওই সময়ে ওই সব অগ্নিদগ্ধ মানুষকে চিকিৎসা দেয়ার মতো কোন আধুনিক চিকিৎসাসেবা ছিল না। পরে ডিএমসিএইচ-এ আরো একটি বার্ন ইউনিট স্থাপন করা হয়।

তিনি বলেন, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশে প্রথমবারের মতো সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে একটি পাঁচ শয্যাবিশিষ্ট ইউনিট স্থাপন করেন।

তিনি আরো বলেন, এছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে বঙ্গবন্ধু থানা পর্যায়ে ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল স্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীকে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা দিতে তার সরকার ২০১৮ সালে সর্বাধুনিক চিকিৎসা সেবা সম্বলিত ৫০০ শয্যার শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল নির্মাণ করেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা ছিল না। সেজন্য আমরা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট নির্মাণ করে মানুষের জন্য আধুনিক চিকিৎসাসেবা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করি।’
তিনি আরো বলেন, দেশে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের সর্ববৃহৎ এই হাসপাতাল চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কিত গবেষণা পরিচালনা এবং দক্ষ ও যোগ্য জনশক্তি সৃষ্টিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কারো উপর নির্ভরশীল থাকতে চায় না। তাই, তার সরকার বিশেষত আধুনিক বিজ্ঞানের ওপর গবেষণা পরিচালনায় সব সময় প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় একটি শক্ত ভিত গড়ে তুলতে তার সরকার দেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে এবং পরে চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহীতে আরো তিনটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশে অনেকগুলো মেডিকেল কলেজ স্থাপন করে।

তিনি আরো বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে তার সরকার দেশব্যাপী কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে-যাতে করে দেশের মানুষ প্রাথমিক অবস্থায় ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ঔষুধ পেতে পারে।

এসময় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ও এসপিএসবি’র সাবেক সভাপতি ডা. সামন্ত লাল সেন এবং এসপিএসবি মহাসচিব ডা. হেদায়েত আলি খান।

এসপিএসবি সভাপতি ও এসএইচএনআইবিপিএস এর পরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype