শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

রাউজানে আধুনিক মেশিনে ভাঙা সরিষার তেল-বিলুপ্ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গরুর ঘানি

রাউজান উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে একসময় দেখা যেতো গরুর ঘানি মেশিনে ঘোরায়ে ভাঙা খাঁটি সরিষার তেল তৈরী করা হতো।এখন তেমন একটা চোখে পড়ে না গরুর ঘানি ও ঘানিতে ভাঙা খাঁটি সরিষার তেল।কালের পরিবর্তনে বিলুপ্ত হয়ে গেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য।

গরুর ঘানিতে ভাঙা খাঁটি সরিষার তেল গ্রামে-গঞ্জের মানুষের কাছে খুব প্রিয়।খাঁটি সরিষার তেলের স্বাদও ছিল ভাল। গ্রাম-অঞ্চলের হাট-বাজার গুলোতে গরুর ঘানিতে ভাঙা খাঁটি সরিষার তেল পাওয়া যেতো। ফলে ঘানিতে ভাঙা খাঁটি সরিষার তেলের স্বাদ আর পাচ্ছে না মানুষ। কালের পরিবর্তনে গড়ে উঠেছে নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান।

আধুনিক প্রযুক্তি মেশিনের ঘানিতে সরিষার ভাঙা তেল তৈরী করা হচ্ছে। তবে এই তেল গরুর ঘানিতে ভাঙা তেলের মতো স্বাদ নেই বলেও চলে। এসব প্রযুক্তি লোহার মেশিনে ভাঙা সরিষার সাথে বিভিন্ন দ্রব্যের মিশ্রণে ভেজাল সরিষার তেল উৎপাদন করায় খাঁটি সরিষার তেলের স্বাদটি পাওয়া যাচ্ছেনা। আগের যুগে এক শ্রেণীর মানুষ দিনরাত গরু দিয়ে কাঠের ঘানি ঘোরায়ে ফোটায় ফোটায় নিংড়ানো খাঁটি সরিষার তেল মাটির হাড়ি করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করতেন। এখন রীতিমতো হাট-বাজারের ফুটপাতে দেখা যায়, প্রযুক্তি মেশিনের ঘানি বসিয়ে সরিষা ভাঙা তেল তৈরি করে বিক্রি করছেন। তবে এটি গরুর ঘানিতে ভাঙা সরিষার তেল মতো নয় বলে সাধারণ মানুষের জানান। কেন না সরিষার সাথে নানা দ্রব্যাদি মিশ্রিত।

রাউজান উপজেলার চিকদাইর,ডাবুয়া,রশিদর পাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে গরু দিয়ে কাঠের ঘানিতে ভাঙা সরিষার তেল তৈরি করতেন। তবে এখন গরুর ঘানির পরিবর্তনে ফুটপাতে দেখা যায়,টমটমে উপরে বসানো ইঞ্জিন চালিত শ্যালোমেশিনে সরিষা ভাঙা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে রাউজান সদর পোষ্ট অফিসের সামনে একটি টমটমে উপরে বসানো হয়েছে সরিষার তেলের ছোট্ট শ্যালোমেশিন। শ্যালোমেশিনে ভাঙা সরিষার তেল কিনতে গাড়িকে ঘিরে ভিড় জমেছে ক্রেতার। হাটহাজারী পশ্চিম ধলই গ্রামের আব্দুর রহমান টেন্ডল বাড়ীর মোহাম্মদ বেলাল ও জামালের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানায়, আগে আমার বাপ-দাদারা গরুর ঘানিতে সরিষার তেল উৎপাদন করতো। এটা তাদের ব্যবসা ছিল।

বর্তমান সময়ে এ তেলে চাহিদা থাকলেও উৎপাদন করে পুষিয়ে উঠা কঠিন। তাই আধুনিক মেশিন দ্বারা তেল তৈরি করছি। তিন কেজি সরিষা থেকে প্রায় এক কেজি তেল বের হয়। প্রতি কেজি তেল আমরা ২২০ টাকা করে বিক্রি করছি। তেল বের করার পর সরিষার খৈল শুকিয়ে বিক্রি করি। সরিষার খৈল মাছ,মুরগি ও গরুর উৎকৃষ্ট খাদ্য। প্রতি কেজি খৈল পাইকারিতে ৪০-৪৫ টাকা, খুচরায় ৫৫-৬০ টাকা বিক্রি করা হয়।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype